ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৫:৫৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবীর ৫৬ কোটির অবৈধ সম্পদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:১৯ পিএম, ১৩ মে ২০২৫ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

সিটিজেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তৌফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমের স্থাবর-অস্থাবর ৫৬ কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে অস্থাবর সম্পদ ৪০ কোটি টাকা ও স্থাবর সম্পদ ১৮ কোটি টাকা। তৌফিকা করিম পরিচিতি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী হিসেবে। দুদকের অনুসন্ধান দল শিগগির তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে। দুদকের একজন পরিচালক কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া তৌফিকার স্বামী আফতাবুল ইসলামের নামেও চলছে পৃথক অনুসন্ধান।

জানা গেছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে আনিসুল হক আইনমন্ত্রী থাকার সময়ে বিচারাঙ্গনের অঘোষিত ‘নিয়ন্ত্রক’ ছিলেন তৌফিকা করিম ওরফে তৌফিকা আফতাব। আনিসুল হকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত সবখানেই তার দাপট। বিচার বিভাগে তিনি গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব বলয়। গুরুত্বপূর্ণ মামলায় প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো রায় করিয়েছেন এই তৌফিকা। চাপ প্রয়োগ করে জামিনও করিয়েছেন অনেক চাঞ্চল্যকর মামলা আসামির।

এর আগে দুদক তৌফিকার ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। সেসব হিসাবে ৪৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৬০ টাকা স্থিতি পাওয়া গেছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় একটি বিলাসবহুল বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিটিজেনস ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে ২৩ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৭ টাকা এবং সিটিজেনস ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার শেয়ার থাকার তথ্য পেয়েছে কমিশন।

তৌফিকা করিম ছিলেন সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। সিটিজেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ৪০০ কোটি টাকা জামানত এবং ২০০ কোটি টাকা চলতি মূলধন দিয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন আনিসুল হক। প্রথমে তার মা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন। আনিসুল হকের মায়ের মৃত্যুর পর বহুল আলোচিত তৌফিকা করিমকে চেয়ারম্যান করা হয়। এই তৌফিকা করিম ছিলেন আনিসুল হকের চালিকাশক্তি। তিনি যা বলতেন তা-ই করতেন আনিসুল হক। এই তৌফিকা করিমের ছেলে ও মেয়েকে কানাডায় বাড়ি করে দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। প্রাইভেট একটি টেলিভিশন কোম্পানিতেও তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি কিছুদিন ওই টেলিভিশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান ছিলেন। গতবছরের ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিটি ব্যাংকের পদ ছাড়েন তৌফিকা। তাকে ওই টেলিভিশন থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

দুদকের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আনিসুল হকের তদবির নিয়ন্ত্রণ করতেন তার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। আনিসুল হকের কাছে থাকা তদবিরের অর্থ লেনদেন হতো গুলশানের অফিসে। জীবন কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর তদবিরের টাকা লেনদেনের দায়িত্ব পান আনিসুল হকের বান্ধবী খ্যাতি পাওয়া তৌফিকা করিম। আনিসুল হকের এক ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে বড় বড় দুর্নীতি মামলায় পক্ষে রায় নেওয়া বা আসামিদের জামিনের গ্যারান্টি দিতেন। টাকার বিনিময়ে বিচারপতি নিয়োগ, সাব-রেজিস্ট্রার বদলি ও পদায়নের বহু ঘটনা রয়েছে।