স্বামীর অত্যাচারে শরীরে আগুন দেওয়া সেই গৃহবধূর মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫৮ পিএম, ১৯ জুন ২০২৫ বৃহস্পতিবার
স্বামীর অত্যাচারে শরীরে আগুন দেওয়া সেই গৃহবধূর মৃত্যু
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে নিজ শরীরে আগুন দেওয়া গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার (২৬) মারা গেছেন। পাঁচ দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, ফাতেমা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। তার শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। মরদেহটি ময়নাতদন্ত করতে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার উপজেলার ১ নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রামের মো. মুসলিমের স্ত্রী। তিনি তিন সন্তানের জননী।
গত ১৪ জুন স্বামীর বাড়িতে নিজ শরীরে আগুন দেন ফাতেমা আক্তার। এ ঘটনায় বুধবার রাতে মামলা করতে গেলে সীতাকুণ্ড থানা- তা আমলে না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
ফাতেমার চাচাতো ভাই গিয়াস উদ্দিন বলেন,‘ফাতেমার মৃত্যুর পর রাতে আমরা সীতাকুণ্ড থানায় গিয়েছি। ভোর পর্যন্ত সেখানে আমরা ছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।’
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।
জানতে চাইলে সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. জাফর বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় আসছিল কিনা আমার জানা নেই। ময়নাতদন্ত যেহেতু হচ্ছে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। আর মামলা দিতে আসলে আমরা আবশ্যই নেব। হয়তো ভুক্তভোগীর পরিবার বিষয়টি বুঝতে ভুল করেছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে স্বামী মুসলিম তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন।গত ১৪ জুন পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে স্বামী আবারও মারধর করলে তিনি ঘরের ভেতর ঢুকে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। তার শরীরের প্রায় ৫৫ শতাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে জানান চিকিৎসকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, ওদের ঘরে ঝগড়া লেগেই থাকত। প্রায় সময় মেয়েটিকে মুসলিম মরধর করতো। ঘটনার দিন সকালে মেয়েটির শাশুড়ি ও স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। এক পর্যায়ে স্বামী মুসিলম তাকে মারধর করেছে। পরে শুনি মেয়েটি আগুনে দগ্ধ হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি খাইরুল ইসলাম বলেন,‘ঘটনার পর আমরা মুসলিমের বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে মেয়েদের কিছু চুল ও আগুনে পোড়া- ছেঁড়া কাপড় দেখতে পাই। মুসলিমের ছেলের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ঘটনার দিন মুসলিম তার স্ত্রীকে মারধর করেছে। তবে আগুনের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি।’
অনেকে বলছে, মুসলিম তার স্ত্রীকে হত্যা করতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়েছে। অনেকে বলছে, ওই মেয়েটি নিজের শরীরে নিজেই আগুন দিয়েছে।
