মিয়ানমারকে হারিয়ে মূল পর্বের পথে বাংলাদেশ
খেলাধুলা ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:০৭ পিএম, ২ জুলাই ২০২৫ বুধবার
ছবি: বাফুফে
প্রথমার্ধে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে করলেন ব্যবধান দ্বিগুণ। ঋতুপর্ণা চাকমার দুর্দান্তা পারফরম্যান্সে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারের বিপক্ষে অভাবনীয় এক জয়ে এএফসি উইমেন’স এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার পথে বড় লাফ দিল বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের ইয়াংগুনের থুয়ান্না স্টেডিয়ামে বুধবার বাছাইয়ের ম্যাচে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
১৮তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৭২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্ণা। শেষ দিকে ব্যবধান কমান মিয়ানমারের উইন উইন।
প্রতিযোগিতায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের টেবিলে শীর্ষে উঠল পিটার জেমস বাটলারের দল।
তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরু করা মিয়ানমারের পয়েন্ট ৩।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী শনিবার। এদিন তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
এই গ্রুপের চার দলের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে দুর্বল দল তুর্কমেনিস্তান, ১৪১তম। এ ম্যাচে অনাকাঙ্খিত কিছু না ঘটলে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া হতে যাওয়া এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত করবেন আফঈদা-স্বপ্নারা।
মিয়ানমারের বিপক্ষে সবশেষ দেখায় ৫-০ গোলে হারের স্মৃতি নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তাছাড়া ম্যাচটিও ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। সবকিছুই ছিল মারিয়া-মনিকাদের প্রতিকূলে। তবে বাহরাইন ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী মেয়েরা শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দলকে হারিয়ে আনন্দ আড়াল করেননি ঋতুপর্ণা। সামনের পথচালায় এই তারকা ফরোয়ার্ড পাশে চাইলেন সমর্থকদেরও।
“আমরা বাংলাদেশ থেকে একটা লক্ষ্য নিয়ে এসেছি, ম্যাচ বাই ম্যাচ জেতার। আমরা আমাদের…যার যার পারফরম্যান্স, তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং সে অনুযায়ী ফল পেয়েছি।”
“সমর্থকদের বলব, সমর্থন করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এখন যেভাবে সমর্থন দিচ্ছেন, আগামীতেও একইভাবে সমর্থন দিয়ে যান।”
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ শানাতে থাকে বাংলাদেশ। অবশেষে ১৯ মিনিটে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ঋতুপর্ণা। শামসুন্নাহার জুনিয়রকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার নেওয়া ফ্রি কিক মিয়ানমারের রক্ষণদুর্গ ফিরিয়ে দেওয়ার পর আবারও বল পান ঋতুপর্ণা। এরপর বাঁ পায়ের দারুণ শটে গোল আদায় করে নেন ঋতুপর্না। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
২৪ মিনিটে বাঁ-প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণার ক্রসে বক্সের ভেতর থেকে শামসুন্নাহার জুনিয়রের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
এক গোল হজমের পর ম্যাচে সমতা ফেরাতে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় মিয়ানমার। কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণদুর্গ ভাঙতে পারেনি তারা। তবে ৪২ মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ পেয়েছিল মিয়ানমার। বাংলাদেশের গোলমুখে তিনবার শট নিয়ে বলকে জালে জড়াতে পারেনি তারা।
বিরতির পরও আক্রমণ অব্যাহত রাখে মিয়ানমার। ৫৭ ও ৫৯ মিনিটে মিয়ানমারের দু’টি আক্রমণ রুখে দেয় বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন ঋতুপর্ণা।
৭০ মিনিটে প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে বাঁ-পায়ের শটে ঋতুপর্ণা ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করলে ২-০ ব্যবধানে লিড নেয় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় গোল হজমের পরও দমে যায়নি মিয়ানমার। আক্রমণ অব্যাহত রাখে তারা। অবশেষে ৮৯ মিনিটে মিয়ানমারকে গোল এনে দেন উইন উইন। এতে ব্যবধান ২-১এ নেমে আসে। কিন্তু ম্যাচের বাকী সময় আর গোল করতে না পারলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিক মিয়ানমারকে। মূল পর্বে খেলার স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ায় আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে বাংলাদেশ।
