ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৪:৩১:৫২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ফ্রান্সেসকা আলবানিজ

ফ্রান্সেসকা আলবানিজ

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের কড়া সমালোচনা করায় ফ্রান্সেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি জাতিসংঘের অধীন অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার (বিশেষজ্ঞ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রয়টার্স, আল জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ফ্রান্সেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আজ আমি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) মাধ্যমে মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের, কোম্পানিগুলো এবং কর্পোরেট নির্বাহীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের যে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন তা অবৈধ ও লজ্জাজনক।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে একাধিক দেশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানান ইতালিয়ান আইনজীবী ও শিক্ষাবিদ আলবানিজ। তিনি গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে ‘গণহত্যামূলক অভিযান’ বলে অভিহিত করেন।

চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলবানিজে ৬০টিরও বেশি কোম্পানির নাম প্রকাশ করেন, যারা ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ ও সামরিক অভিযানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। তিনি এসব কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনে জড়িত নির্বাহীদের বিচারিক জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

বুধবার রাতে এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে আলবানিজ বলেন, ‘আমি সবসময় যেভাবে ন্যায়ের পক্ষে থেকেছি, এখনো ঠিক সেভাবেই অবিচল ও দৃঢ়ভাবে ন্যায়ের পাশে আছি।’ আল জাজিরাকে পাঠানো এক বার্তায় তিনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘মাফিয়া স্টাইলে ভয়ভীতির কৌশল’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো আলবানিজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি-র সরকারের সঙ্গে সম্পর্কবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিলান উইলিয়ামস এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘দুষ্কৃতিকারী রাষ্ট্রের আচরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারদের সুরক্ষা দেওয়া উচিত, নিষেধাজ্ঞা নয়।

অ্যামনেস্টির মহাসচিব ও জাতিসংঘের সাবেক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার আগ্নেস কালামার্ড বলেন, ‘বিশ্বের সব সরকার এবং আইনের শাসন ও আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী সব পক্ষের উচিত এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব প্রতিহত করা এবং বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারদের স্বাধীনতা ও কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সাধারণত নির্দিষ্ট ইস্যু বা সংকট নিয়ে কাজ করেন। তাদের মতামত জাতিসংঘের সামগ্রিক অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এদিকে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা হ্রাস করেছে। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন। একিই সঙ্গে ইউনেস্কো ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন।

চলতি বছরের জুন মাসে তার প্রশাসন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এটি ছিল আদালতের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ।

ইসরায়েল অবশ্য এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেছে, গাজায় তাদের অভিযান আত্মরক্ষামূলক এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরের হামাস হামলার প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে।