ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:০৪:৫৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মা-বাবার বিরুদ্ধে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৪৪ এএম, ১১ জুলাই ২০২৫ শুক্রবার

মেহরীন আহমেদ (১৯)।

মেহরীন আহমেদ (১৯)।

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নিজের মা-বাবার বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানিতে আদালতে হাজির হয়ে বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়েছেন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া মেহরীন আহমেদ (১৯)।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে মামলার শুনানি হয়। এ মামলায় মা-বাবার উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের শুনানির দিন ধার্য ছিল।

গণমাধ্যমকে মেহরীন আহমেদ বলেন, আমার পিতা-মাতা ক্রিমিনাল, তারা আমার কাছে পিতা-মাতা নন। আমি চাই এ ভিডিওটা সারা ওয়ার্ল্ডে ভাইরাল করতে। জন্ম থেকে আমি সাফার করছি। দে আর চাইল্ড অ্যাবিউজার। তারা আমাকে অপব্যবহার করেছেন। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

শুনানিতে মেহরীন মা-বাবাকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘তাদের (বাবা-মা) মাধ্যমে আমি পৃথিবীতে এসেছি এটা আমার দোষ না। আমি তাদের পাপেট (পুতুল) নই। আমাকে কেন গালি দেবে?

আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আমি খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না। আমাকে তারা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। ব্রেইন অ্যান্ড মাইন্ড হাসপাতালে আমাকে দুই বছর রাখা হয়।

সেখানে আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আমাকে কেন ওই হাসপাতালে রাখা হলো, জানতে চাই।’

শুনানিতে মেহরীনের মা-বাবার পক্ষে আইনজীবী আবুল হোসেন আদালতে বলেন, মেহেরীন তার মা-বাবার একমাত্র সম্বল, একমাত্র আশা-ভরসার স্থল।

মা-বাবাও চান তাদের মেয়ে সুরক্ষার আদেশ পাক। দেশের বাইরে তাদের সামর্থ্য অনুসারে মেয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। শুনানি শেষে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানান তিনি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসফাকুর রহমান গালিব জানান, আদালত আজ উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। এ সময় বাদীপক্ষ থেকে জানানো হয়, বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই বাদী পরিবারের সদস্যদের অবহেলা ও তাদের দ্বারা মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।

তাই তিনি পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০ অনুযায়ী সুরক্ষা আদেশ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় ব্যয়ভারের জন্য আবেদন করেছেন।

এর আগে গত ২২ জুন বাবা নাসির আহমেদ ও মা জান্নাতুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে নিজের সুরক্ষা চেয়ে একই আদালতে মামলা করেন রাজধানীর এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী মেহরীন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসায় বাদী মেহরীন আহমেদকে তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ শারীরিকভাবে আঘাত করেন এবং গালি দেন। তাকে মেরে জখম করা হয়।

বাদী একজন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও তারা তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, অপমান ও নির্যাতন করে যাচ্ছেন। তারা প্রতিনিয়ত পরিবারের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহারে বাধা দেন।

এতে আরও বলা হয়, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে যেসব সম্পদ বা সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের অধিকার রয়েছে, তা থেকে তাকে বঞ্চিত করে এবং বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়।

তারা মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভীতি প্রদর্শন, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তারা শারীরিকভাবে তাকে আঘাত করেন। যার মাধ্যমে সহিংসতা ঘটেছে।