ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ০:৪৯:৩২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

খেলাধুলা ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৩১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৫ রবিবার

ছবি: সংগ্রহিত।

ছবি: সংগ্রহিত।

শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে বড় পুঁজি এনে দিলেন লিটন কুমার দাশ ও শামীম হোসেন। পরে বল হাতে জ্বলে উঠলেন শরিফুল ইসলাম, মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিন, রিশাদ হোসেনরা। শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ।

ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আজ রোববার শ্রীলঙ্কাকে ৮৩ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। ১৭৮ রানের লক্ষ্যে ১৫.২ ওভারে ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা।

রানের হিসেবে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮০ রানে হারিয়েছিল তারা।

সব মিলিয়ে এর চেয়ে বড় জয় আছে আর মাত্র একটি। ২০২১ বিশ্বকাপে পিএনজির বিপক্ষে ৮৪ রানে জিতেছিল তারা।

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর এটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সব মিলিয়ে এবারই প্রথম একশর কমে অলআউট হলো তারা।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা আনল সফরকারী দল।

জয়ের নায়ক লিটন ব্যাট হাতে ৫০ বলে ৫ ছক্কা ও ১ চারে করেন ৭৬ রান। উইকেটের পিছনেও এদিন লিটন ছিলেন দুর্দান্ত। দুটি ক্যাচ নেওয়ার পাশাপাশি করেন দুটি স্টাম্পিং। ১৩ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন তিনি।

২৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ রান করার পর শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে মোক্ষম আঘাত হানেন শামীম। দ্বিতীয় ওভারেই সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করেন ভয়ঙ্কর কুসল মেন্ডিসকে।

পরে বল হাতে ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন রিশাদ। দুটি করে শিকার ধরেন শরিফুল ও সাইফউদ্দিন, একটি করে মিরাজ ও মোস্তাফিজ।

পাওয়ারপ্লের মাঝে শ্রীলঙ্কার চার উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। কুসলকে রান আউটে ফেরানোর পরের ওভারে রিশাদের হাতে কুসল পেরেরাকে ক্যাচ বানান দলে ফেরা শরিফুল ইসলাম। নিজের পরের ওভারে অভিস্কা ফার্নান্ডোকে শামীমের ক্যাচে পরিণত করেন এই বাঁহাতি পেসার।

পরের অর্থাৎ ষষ্ঠ ওভারে চারিথ আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটিং লাইন আপ প্রবল চাপে ফেলে দেন সাইফউদ্দিন।

১১ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারানো দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা ও দাসুন শানাকা। এই দুজনই কেবল দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেন। জোড়া আঘাতে তাদের সেই চেষ্টা চুরমার করে দেন রিশাদ।

পঞ্চম উইকেট জুটি থেকে আসে ৩১ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪১ রান। ২৯ বলে ৩২ রান করা নিশাঙ্কাকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন রিশাদ। এক বল পর নতুন ব্যাটার চামিকা কারুনারত্নেকে ফিরতি ক্যাচ বানান এই ডানহাতি লেগ স্পিনার।

মিরাজের করা পরের ওভারে শানাকাও (১৬ বলে ২০) ফিরলে জয়ের পথ রচনা করে ফেলে বাংলাদেশ। এরপর ছিল চূড়ান্ত উদযাপনের অপেক্ষা। অপেক্ষা বাড়তে দেননি রিশাদ, মোস্তাফিজ, সাইফউদ্দিনরা। বিনুরাকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে তুলির শেষ আচড় দেন রিশাদ।

আগের ম্যাচের একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ছিল খুবই বাজে। প্রথম দুই ওভারে স্রেফ ৭ রানে বিদায় নেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান। ৫৫ বলে ৬৯ রানের জুটিতে সেই ধাক্কা সামাল দেন লিটন ও হৃদয়।

হৃদয়ের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ২৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করেন হৃদয়। একই ওভারে বিনুরার শিকার হয়ে ফেরেন নতুন ব্যাটার মিরাজও।

এরপর সেরা জুটি পায় বাংলাদেশ। ৩৯ বলে ৭৭ রান যোগ করেন লিটন ও শামীম। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে মাহেশ থিকসানাকে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৬ রান।

শেষ ওভারে টানা দুই বলে রান আউট হন চোট কাটিয়ে ফেরা জাকের আলি ও শামীম। উইকেটকিপারের হাতে বল রেখে রান নিতে গিয়ে আউট হন দুজনই। ২৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ রান করেন শামীম।

 শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সংগ্রহটা বাড়ান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

৪ ওভারে ৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সফলতম বোলার বিনুরা ফার্নান্ডো।

সিরিজ সির্ধরণী ম্যাচ আগামী বুধবার, কলম্বোয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭৭/৭ (তানজিদ ৫, পারভেজ ০, লিটন ৭৬, হৃদয় ৩১, মিরাজ ১, শামীম ৪৮, জাকের ৩, রিশাদ ০, সাইফ ৬; থুসারা ৪-০-৩০-১, বিনুরা ৪-০-৩১-৩, শানাকা ২-০-২৩-০, থিকশানা ৪-০-৩০-১, ভ্যান্ডারসে ৪-০-৪০-০, কারুনারাত্নে ২-০-১৮-০)

শ্রীলঙ্কা: ১৫.২ ওভারে ৯৪ (নিসাঙ্কা ৩২, কুসাল মেন্ডিস ৮, কুসাল পেরেরা ০, আভিশকা ২, আসালাঙ্কা ৫, শানাকা ২০, কারুনারাত্নে ০, ভ্যান্ডারসে ৮, থিকশানা ৬, বিনুরা ৬, থুসারা ০; শরিফুল ৩-০-১২-২, সাইফউদ্দিন ৩-০-২১-২, মুস্তাফিজ ৩-০-১৪-১, মিরাজ ৩-০-২৬-১, রিশাদ ৩.২-০-১৮-৩)

ফল: বাংলাদেশ ৮৩ রানে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: লিটন কুমার দাস