হিরোশিমা বিভীষিকার ৮০ বছর, স্মৃতির মর্মান্তিক দিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:০৮ পিএম, ৬ আগস্ট ২০২৫ বুধবার
হিরোশিমা বিভীষিকার ৮০ বছর, স্মৃতির মর্মান্তিক দিন
হিরোশিমায় পারমাণবিক আঘাতের ৮০ বছর পূর্তি আজ বুধবার। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরে ‘লিটল বয়’ নামের পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। যদিও সময়ের সঙ্গে প্রাণহানির সংখ্যা কমে আসছে, বেঁচে যাওয়া যারা আছেন, তারা আজও ওই ভয়াবহ ঘটনার শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে বাঁচছেন।
এর মাত্র দুদিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতেও পারমানবিক বোমা বিস্ফোরণ হয় এবং হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানী ঘটে।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের এক পারমাণবিক বোমা আছড়ে পড়ে। এই বিস্ফোরণে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং বছরের শেষ নাগাদ মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজারে দাঁড়ায়।
পারমাণবিক বোমার প্রভাব এতই ভয়াবহ ছিল যে, শহরের কেন্দ্র থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে থাকা অধিকাংশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এই বিস্ফোরণের শিকার ব্যক্তিদের শরীরে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ দেখা দেয়, যা আজও গবেষণার বিষয়।
বিস্ফোরণের সময় বেঁচে থাকা ও আজ জীবিত থাকা মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত কম। হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হাইপোসেন্টারের কাছাকাছি থাকা মাত্র কয়েকজন আজ বেঁচে আছেন, যেমন ৮৯ বছর বয়সী তসুনেহিরো তোমোদা। তারা যাদের বয়স ছিল কম, তাদের মধ্যে ক্যান্সারের হার অন্যান্যদের তুলনায় বেশি। ১০ বছর বয়সে বাবাকে খুঁজতে গিয়ে ভয়াবহ দৃশ্যের মুখোমুখি হয়েছিল ইয়োশিকো নিয়ামা, যিনি আজও সেই স্মৃতি ভুলতে পারেন না।
পাশাপাশি, কোরিয়ার শরণার্থী শ্রমিক শিম জিন-টায়ে, যিনি বোমা বিস্ফোরণের সময় সেখানে ছিলেন। বেঁচে থেকে আজ সামাজিক বৈষম্য ও অবহেলার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন তিনি।
তিনি বলেন, জাপান এ দায় স্বীকার করেনি, আমেরিকা ক্ষমা চায়নি এবং কোরিয়া তাদের ভুলে গেছে। পারমাণবিক হামলার শিকার কোরিয়ানরা অতীতে লাশ পরিষ্কারে বাধ্য করা হয়েছিল এবং এখনও অনেকেই দারিদ্র্য ও বৈষম্যের মধ্যে জীবন যাপন করছেন।
হিরোশিমার ঘটনা শুধু ইতিহাস নয়, এটি বেঁচে থাকার অমোঘ যন্ত্রণা এবং মানবতার প্রতি সতর্কবার্তা। আজ ৮০ বছর পরও সেই স্মৃতির আগুন হৃদয়ে দগদগে জ্বলছে, যা কখনো ম্লান হবে না। বিশ্ববাসীকে একত্রিত করে শান্তি ও পরমাণু অস্ত্র নির্মূলের জন্য বার্তা দেয় এই স্মরণকালের দিনটি।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান
