ব্যারিস্টার দম্পতির বিরুদ্ধে দুই শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:২২ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার
প্রতীকী ছবি।
রাজধানীর নিকেতনের বাসিন্দা এক ব্যারিস্টার দম্পতির বিরুদ্ধে দুই শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলা করেছেন এক শিশুর বাবা জুয়েল মিয়া। মামলার আসামিরা হলেন- ব্যারিস্টার ওমর শোয়েব চৌধুরী ও তার স্ত্রী সাথী বেগম।
নির্যাতনের শিকার দুই শিশুর মধ্যে তৃষার বয়স ১২ বছর, আর সুমাইয়ার ১১ বছর। তাদের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে, সম্পর্কে তারা ফুপু-ভাতিজি।
গত ১৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা এই করেন শিশু তৃষার বাবা জুয়েল মিয়া। গতকাল বুধবার মামলার এজাহার আদালতে আসার পর ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
একই দিন দুই শিশু তৃষা ও সুমাইয়াকে আদালতে হাজির করা হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালত তাদের নির্যাতনের বর্ণনার জবানবন্দি করেছেন। যা আজ বৃস্পতিবার জানা গেছে। শিশু দুটিকে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এক বছর আগে তৃষাকে ছয় হাজার টাকা বেতনে নিকেতনের ওই বাসায় কাজ দেওয়া হয়। তখন বলা হয়েছিল, ওমর শোয়েব চৌধুরীর শিশু সন্তানকে দেখাশোনা করতে হবে। ৬ মাস আগে সুমাইয়াকেও ওই বাসায় কাজে পাঠায় তার পরিবার।
মাঝেমধ্যে ভিডিও কলে দুই শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হতো। তখন তাদের গা-মাথা ওড়নায় ঢেকে কথা বলতে দেওয়া হতো। বড় বোনের বিয়ে উপলক্ষে তৃষাকে বাড়ি নিয়ে যেতে তার বাবা জুয়েল মিয়া বাসার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন দুই শিশুকে একসঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়।
পরে গত ১৭ অগাস্ট বাসার মালিক দুই শিশুকে জাহিদ হাসান নামের এক ড্রাইভারকে দিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে পাঠান। তখন তাদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যান জুয়েল। বাড়ি গিয়ে দেখেন তৃষা ও সুমাইয়ার হাত, পা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য পোড়া, ছ্যাঁকা এবং আঘাতের চিহ্ন।
দুই শিশু তখন জানায়, বাসায় কাজে সামান্য ভুলত্রুটি হলেই গৃহকর্তা ওমর শোয়েব চৌধুরী তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। গৃহকর্তা তাদের বেশি মারধর করতো বলে অভিযোগ করে তারা।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন কাদের সাউন বলেন, ‘দরিদ্র পরিবার, অভাব-অনটনের কারণে মেয়ে দুটোকে গৃহকর্মীর কাজে দিয়েছিল পরিবার। কিন্তু তাদের পা টেপানোর মতো অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হতো। রাজি না হওয়ায় নির্যাতন করা হতো।’
অভিযোগের বিষয়ে ওমর শোয়েব চৌধুরী স্ত্রী সাথী বেগম জানিয়েছেন, শিশুদের শরীরে যে দাগ তা আগেই ছিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলায় করা অভিযোগ সত্য নয়।
