চারদিকে দেখি শুধু বিভূ দার প্রতিচ্ছবি
উম্মুল ওয়ারা সুইটি
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২৫ রবিবার
উম্মুল ওয়ারা সুইটি
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী বিভূ রঞ্জন সরকার এখন প্রয়াত। জেদি- আবেগী মেধাবী মানুষেরা বিভূদার মতোই করেন। সৃজনশীল মানুষের মনে যে আন্দোলন আর বিপ্লব জেঁকে বসে সামনে অথৈ, সেখানেই বিলীন।
বিভূরঞ্জন সরকার নিজেই তার পাট চুকিয়ে গেছেন। ইতিহাসে এমন ঘটনা রয়েছে। জীবনের স্বাদ যখন কোথাও পাওয়া যায় না, তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে। বিভূদা আমাদের পরিবারের মানুষ। মানে যারা আমরা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী বলে আত্মতৃপ্তির চিৎকারে আকাশ কাঁপিয়ে তুলছি।
বিভূদার এই চলে যাওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ছবি ভেসে উঠার আহাজারির প্রকাশ দেখা যাচ্ছে।
সাংবাদিক বিভূরঞ্জনের শেষ কলাম নিয়ে সাংবাদিক নামের আজব প্রাণীদের যুদ্ধ চলছে। তাকে দলে ঠেলে দেওয়া আর দলে টেনে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে দাসত্ব, দালাল আর জিহবা বের করা সাংবাদিক নামের একদল।
প্রয়াত সাংবাদিক তার সর্বশেষ কলামে তার রাজনৈতিক এবং দর্শন সম্পর্কে বলে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিয়মিত তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। সাংবাদিকতায় তার লিগেচি তিনি বলেছেন। তিনি না আওয়ামী লীগ করেছেন না বিএনপি করেছেন না অন্য কোন দল। ভেতরে কোন রাজনৈতিক দর্শন থাকলেও কলামে তার নমুনা দেখা যায়নি।
আর বিভূরঞ্জন কতটুকুই বা করেছেন, হয়তো ১৬ বছরে বিগত সরকারের পক্ষে যায় এমন কয়েকটা না কলাম লিখেছেন। তাও হয়তো জীবনের নিত্য প্রয়োজন মেটাতে।
গত ৩০ বছরে দেখেছি সাংবাদিকতার ঘরে ইঁদুরের বাসা। সম্পাদক বা তার কাছাকাছি পদের জন্য বিগত দুই দশকে দেশের শীর্ষ জায়গাগুলোতে গিয়ে যেভাবে তদবির লবিং করতে দেখেছি, তার কথা আমরা বলি না।
বিভূদা বা আমাদের এই অবস্থার জন্য আমরাই দায়ী। আমি তো দেখি চোখের সামনে অসংখ্য বিভূ।
বিভূরঞ্জনদের কেউই জীবিত থাকতে গ্রহণ করে না। বিভূ দা এই পেশার প্রেমে পড়েছিলেন তাই ব্যবসা করতে পারেননি।
আমরা হয়তো বিভূদার মতো এতো স্যাক্রিফাইস করতে পারবো না। তবে পেশা থেকে মানে এই তেলের ঘর থেকে বিদায় নিবো। আমি তো দেখছি এ পেশায় অসংখ্য বিভূ দা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর একদল খেয়ে গেছে। আরেক দল বসেছে।
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক দেশ রূপান্তর।
