ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:১৫:৪২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মানবতার প্রতীক মাদার তেরেসার জন্মদিন আজ

অনু সরকার

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২৩ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২৫ মঙ্গলবার

মাদার তেরেসা

মাদার তেরেসা

সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের সেবায় সারাটা জীবন অতিবাহিত করেছিলেন আলবেনিয়া থেকে ভারতে আসা নারী মাদার তেরেসা। আজ তার ১১৫তম জন্মদিন। মানুষের মাঝে তিনি খুঁজে নিয়েছিলেন ঈশ্বরকে। তার কাছে ছিল না কোনো জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ, মানবসেবাকেই ধর্ম হিসেবে নিয়েছিলেন। 
মাদার তেরেসার আসল নাম আগনেস গঞ্জা বয়াজু। মেসিডোনিয়ার স্কোপি শহরে ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট একটি ক্যাথলিক পরিবারে তার জন্ম।
১৯১৯ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে তেরেসা বাবাকে হারান। হঠাৎ এ বিপর্যয়ের ফলে তার মা ভীষণ মুষড়ে পড়েন। জীবনের এ সংগ্রাম থেকে দারিদ্র্য আর প্রতিকূলতাকে সাহস ও উদ্দীপনার সঙ্গে গ্রহণ করার তৎপরতা আবিষ্কার করেন মাদার তেরেসা। মা তাকে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে লালন-পালন করেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তেরেসা। ১৯২৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর গৃহত্যাগ করে ‘সিস্টার্স অব লরেটো’ সংস্থায় যোগ দেন সিস্টার হিসেবে।সেসময় সময়ে তিনি ভারতে মানবসেবার কাজ করতেন। দুস্থ মানুষকে সাহায্য করার কাজটি যেন তার কাছে নেশার মতো হয়ে গেল। কলকাতার অলিগলি আর বস্তিতে ঘুরে বেড়াতে থাকেন, উদ্দেশ্য অসহায় মানুষদের সেবা করা। এরপর মাত্র ১২ সদস্য নিয়ে ১৯৫০ সালের ৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করেন ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’। যার শাখা বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে আছে। ১৯৪৮ সালের ২১ ডিসেম্বর তেরেসা ভারতের নাগরিকত্ব লাভ করেন।
মাদার তেরেসার খ্যাতি শুধুমাত্র ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরং তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেবা ধর্ম-কর্মের জন্য ১৯৭৯ সালে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’ পান ও ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেন। নোবেল ও ভারতরত্ন পুরস্কার ছাড়াও তিনি পেয়েছেন ১৯৬২ তে ‘পদ্মশ্রী পুরস্কার’, ১৯৭২ তে ‘নেহেরু পুরস্কার’, ১৯৭৮ তে পেয়েছিলেন ‘বালজান পুরস্কার’ ও ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে পেয়েছেন ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রীডম’। এছাড়াও বিশ্বভারতীর ‘দেশিকত্তম উপাধি’ এবং ভ্যাটিকান সিটির ২৩তম পোপ জন পুরস্কার পান।
অসুস্থ মানুষের নিঃস্বার্থ সেবা ও অক্লান্ত কর্মপ্রচেষ্টার পরও তার বার্ধক্য জীবন মোটেও সুখদায়ক ছিল না। ১৯৮৩ সালে রোম সফরের সময় মাদার তেরেসার প্রথম হার্ট অ্যাটাক হয়। ১৯৮৯ সালে আবারও হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর তার দেহে কৃত্রিম প্রেসমেকার স্থাপন করা হয়। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোতে থাকার সময় নিউমোনিয়া হওয়ায় হৃদরোগের আরও অবনতি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে তিনি মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন।
১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে সরে দাড়ান। ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।