গাজায় নিহত সাংবাদিকের চিঠি পড়ে আবেগাপ্লুত আলজেরিয় রাষ্ট্রদূত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৫৩ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
ছবি: সংগ্রহিত।
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি ফটো সাংবাদিক মরিয়ম আবু দাক্কার লেখা চিঠি জাতিসংঘে আবেগের ঝড় তুলেছে। আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমর বেনজামা চিঠিটি পড়ে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি।
মরিয়ম আবু দাক্কার চিঠিটি তার ১৩ বছর বয়সী ছেলে গাইথকে উদ্দেশ্য করে লেখা ছিল। মৃত্যুর আগে চিঠিতে নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
ইসরাইলি হামলার সময় এই ৩৩ বছর বয়সী নারী ফটো সাংবাদিক গাজার নাসের হাসপাতালে নিহত হন। ওই হামলায় আরও ২০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে সামাজিক মাধ্যমে মরিয়ম লিখেছিলেন, ‘তুমি তোমার মায়ের প্রাণ আর আত্মা… আমি মারা গেলে আমার জন্য কেঁদো না, দোয়া করো। বড় হলে, বিয়ে করলে, আর কন্যাসন্তান জন্মালে তার নাম রেখো মরিয়ম, আমার নামে।’
এই বিদায়বার্তা রাষ্ট্রদূত বেনজামার মতে, ‘যে কোনো সরকারি বিবৃতির চেয়ে অনেক বেশি সত্য বহন করে।’
বেনজামা বলেন, মরিয়মের হাতে ছিল কেবল একটি ক্যামেরা এবং প্রেস ভেস্ট। সাংবাদিকদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে, যাতে গাজার বাস্তবতা লুকানো যায়।
তিনি উল্লেখ করেন, এখন পর্যন্ত ২৪৫ সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং আগস্টের শেষদিকে আরও ছয়জনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করেছে ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)।
তিনি গাজার ক্ষুধার্ত শিশু ইয়াজান আবু ফুলের ছবি তুলে ধরেন, যাকে অস্থি-চর্মসার অবস্থায় বাবার কোলে দেখা যায়। রাষ্ট্রদূত বেনজামা গাজাকে “জীবন্ত নরক” আখ্যা দিয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে সমালোচনা করেন।
তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চাপানো, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং গণহত্যা রোধ করার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়, এবং ১৪ সদস্য ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে “অবিলম্বে, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি” আহ্বান জানান। এছাড়াও তারা সব বন্দির মুক্তি ও ত্রাণ সহায়তা বৃদ্ধি করতে বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই ঘোষণায় সই করতে অস্বীকার করেছে।
ইসরাইলি হামলা শুরুর পর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে প্রায় ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইতিমধ্যেই গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গাজায় গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।
