দেশে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে ৬৫ লাখ মানুষ, ৯০ ভাগই নারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:৫৭ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার
প্রতীকী ছবি
বাংলাদেশে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছে ৬৫ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে ৯০ ভাগই নারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার তথ্য মতে, ২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিবছর ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। ২০২০ সাল নাগাদ প্রতিবছর সাড়ে ১৫ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত আত্মহত্যার সংবাদ - কেমন হওয়া উচিত শীষর্ক কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় আত্মহত্যার প্রতিবেদন প্রকাশে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান মানছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিত্সকরা। তারা বলেছেন, আত্মহত্যার প্রতিবেদন এমন হওয়া উচিত যেন সেই প্রতিবেদন পড়ে অন্য কেউ আত্মহত্যায় অনুপ্রাণিত না হয়, কিংবা আত্মহত্যার নতুন কোনো পরিকল্পনার পথ খুঁজে না পায়।
অনুষ্ঠানে আত্মহত্যার ঝুঁকি ও প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (এনআইএমএইচ) অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল। আত্মহত্যার সংবাদ - কেমন হওয়া উচিত বিষয়ে আলোচনা করেন এনআইএমএইচ এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, আত্মহত্যার প্রতিবেদন বিষয়ক আলোচনা করেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যের জাতীয় কনসালট্যান্ট ড. হাসিনা মমতাজ, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আত্মহত্যা বিষয়ক আলোচনা করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসার ডা. মো. ফারুক আলম।
ডা. মোহিত কামাল বলেন, চিকিত্সায় আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যায়। তিনি বলেন, প্রিয়জনকে শুধু ভালোবাসলেই হয় না, তাকে বুঝতে হবে। প্রিয়জনের মনের অসুস্থতা ধরা পড়লে, চিকিত্সার মাধ্যমে তাকে মানসিক চাপ বা আত্মহত্যা প্রবণতা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এদের বেশির ভাগই নারী। তিনি বলেন, অনেক গণমাধ্যমে আত্মহত্যার সংবাদটি এমনভাবে প্রকাশ করে যে, যা থেকে অন্যরা অনুপ্রাণিত হয়, নতুন করে আত্মহত্যার পথ খুঁজে পায় এবং এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের পরের ১০ দিনে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায়। এ বিষয়গুলো বুঝেই প্রতিবেদন তৈরি করা প্রয়োজন।
ডা. মেখলা সরকার বলেন, আমাদের দেশে যত মানুষ আত্মহত্যা করে, তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ আত্মহত্যার কথা ভাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিষপানে আত্মহত্যা করে বেশি। আর গ্রামাঞ্চলে ফসলের খেতে ব্যবহূত কীটনাশকের বিষেই আত্মহত্যা করে বেশি। যে কারণে কীটনাশকের বিষ এমন হওয়া উচিত, যেন তাতে পোকামাকড় ছাড়া, মানুষ না মরে।
ডা. হাসিনা মমতাজ বলেন, আত্মহত্যার প্রতিবেদন প্রচারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা গাইডলাইন অনুসরণ করেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা উচিত। তিনি বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে সরকারি হটলাইন থাকা প্রয়োজন। কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও এই হট লাইন চালু হতে পারে।
