ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ২:৩৪:৪৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

আগস্টে নির্যাতনের শিকার ২২৩ নারী ও কন্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৩৪ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের আগস্ট মাসেই বাংলাদেশে ২২৩ জন নারী ও কন্যাশিশু নানা ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সহিংসতার নানা ঘটনায় এদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৮৪ জন নারী ও কন্যাশিশু। 

এর মধ্যে ৭ জন কন্যা এবং ৫৫ জন নারীকে হত্যার পর লাশ ফেলে রাখা হয়। হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন আরও ১ জন কন্যা ও ৪ জন নারী। রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন ৬ জন কন্যা ও ১১ জন নারীসহ মোট ১৭ জন। 

এছাড়া ৬ জন কন্যা ও ১৯ জন নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন- যার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ জনে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সোমবার এই তথ্য জানানো হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৫টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আগস্ট মাসজুড়ে ৫৩ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ২১ জন কন্যা এবং ১৫ জন নারী একক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮ জন কন্যা ও ৭ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২ কন্যাকে। এছাড়া ১০ জন কন্যাসহ ১৩ জন নারী ধর্ষণচেষ্টার শিকার হন।

একই সময়ে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৬ জন কন্যা ও ১০ জন নারীসহ মোট ১৬ জন। এ ছাড়াও ১ জন নারী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পারিবারিক সহিংসতার কারণে ১ কন্যা ও ৪ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা এক নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এসময়ে ৫ জন কন্যাশিশু অপহরণের শিকার হয়েছেন। পাচারের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ২ কন্যার ক্ষেত্রে। 

একই মাসে ১ কন্যাসহ মোট ২ জনকে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ২ জন কন্যা ও ১০ জন নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নানা ধরনের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আরও ১ জন কন্যা ও ৩ জন নারী।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে, নারীর প্রতি সহিংসতার এ ধারা অব্যাহত থাকা উদ্বেগজনক। প্রতি মাসেই নারী ও কন্যাশিশু হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, যৌন নিপীড়ন ও অপহরণের মতো ঘটনা বেড়ে চলেছে। আইনের শাসনের দুর্বলতা, বিচার প্রক্রিয়ার জটিলতা, সামাজিক সচেতনতার ঘাটতি এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এই সহিংসতা কমার বদলে বাড়িয়ে তুলছে। 

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, শুধু আইনি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়- পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সমান সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মহিলা পরিষদ সরকারের প্রতি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনার দ্রুত বিচার, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার দাবি জানায়।