আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শনিবার
প্রতীকী ছবি।
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের (মৃত্যু) দিন হিসেবে বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে দিনটি। মুসলিম উম্মাহ এই দিনে মহানবীর জীবন ও শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। তার শিক্ষার আলোকে মানবিক মূল্যবোধ, শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা স্মরণ করে।
ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন হয় প্রতি বছর আরবি ক্যালেন্ডারের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে। এ দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয় কারণ, ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন মহানবী (সা.)। একই দিনে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। মহানবীর আগমনের আগে আরব জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, যেখানে মানুষ আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অনৈতিক কাজ ও বিশৃঙ্খলায় লিপ্ত ছিল। মহান আল্লাহ সেই অন্ধকার যুগ থেকে মানবজাতিকে আলোর পথে পরিচালনার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন।
মহানবী (সা.) অল্প বয়সে আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হন এবং হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। সারাদেশে এই পুণ্যময় দিনটি যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দেশব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আজ সকাল থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। রাজধানীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ কালিমা তাইয়্যেবা লেখা ব্যানার ও পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে, যার মূল কেন্দ্র জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম। অনুষ্ঠানে কিরাত ও নাত প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক আসর, আরবি খুতবা রচনা প্রতিযোগিতা, সেমিনার ও স্মারক প্রকাশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও ১২ রবিউল আউয়াল থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী একটি ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলো মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। শিশুদের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নাত পাঠ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশু নিবাস এবং বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালন করবে।
এইসব কর্মসূচির মাধ্যমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা, শান্তি, সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার ও নারী মর্যাদার বার্তা সব শ্রেণির মানুষদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
