ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ২:৩৭:৩৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সিলেটে আগে থেকেই পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল: পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:১০ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শনিবার

ছবি: সংগ্রহিত।

ছবি: সংগ্রহিত।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগে থেকেই সিলেটের পাথরমহাল এলাকাগুলো থেকে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল। আমি এ বিষয়ে প্রথম মামলা করি ২০০৯ সালে।

আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজনৈতিক সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকার জলাধার পুনরুদ্ধার: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা শীর্ষক নগর সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের ছয়টি জায়গা থেকে নির্বিঘ্নে পাথর উত্তোলন হচ্ছিল। আমি এ বিষয়ে প্রথম মামলা করি ২০০৯ সালে। এর আগেই অন্তত দুই বছর ধরে উত্তোলন চলছিল। পরে দীর্ঘ মামলার লড়াই ও অ্যাডভোকেসির পর ২০২০ সালে জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়। সরকার তখন উদ্যোগ নেওয়ায় বাকি ছয় জায়গায়ও কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু লুটপাট আবার শুরু করার জন্য পাল্টা প্রচেষ্টা চলতে থাকে।

তিনি বলেন, এখন বলা হচ্ছে, কয়েক দিনে ৩০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। অথচ ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র ৪০ কোটি টাকা। তাহলে প্রকৃত মূল্য ও রাজস্বের সঙ্গে কোনো সামঞ্জস্য নেই। লুটেরাদের আসলে আমরা নিজেরাই তৈরি করেছি।

রিজওয়ানা হাসান জানান, দেশের মোট পাথরের চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশ আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে, বাকিটা আমদানি করা হয়। তাহলে কেন এই ছয়টি জায়গা সংরক্ষণ করা গেল না?

ট্যুরিজম মাস্টার প্ল্যানের অভাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করে পর্যটন উন্নয়ন করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে জাফলংসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো এখনো সংরক্ষিত হয়নি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, সর্বদলীয় ঐক্যের কথা আমিই বলেছিলাম। এজন্যই রাজনৈতিক ঐক্যও গুরুত্বপূর্ণ । রাজনৈতিক সমর্থন যদি না থাকে তাহলে প্রশাসন সাহায্য করবে না। প্রশাসন সাহায্য না করলে পাথর তোলা বন্ধ করা সম্ভব নয়। পাথর তোলা অবৈধভাবে বন্ধ করতে কাজ করবে প্রশাসন।

রিজওয়ানা হসান আরও বলেন, পাথর কিন্তু আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় না। তারপরও আমি সিলেটের ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঠিক যেভাবে আমরা সাদা পাথর নিয়ে কথা বলি ঠিক একইভাবে বাকখালি নদীর দূষণ নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। কারণ, দশতলা ভবন ভাঙতে বাধা দেওয়া জন্য মাঠ পর্যায়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলো।  

চলনবিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে চলনবিল সুরক্ষার জন্য আদেশ জারি করে এর সীমানা নির্ধারণ করা হবে, যাতে ভরাট বন্ধ রাখা যায়। বর্তমানে আড়িয়াল বিল, চলনবিল এবং বেলার বিল নিয়ে কাজ চলছে।

ঢাকার জলাশয় নিয়ে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ঢাকার জেলা প্রশাসককে ৪০টি পুকুর উদ্ধারের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাল খননের উদ্যোগ নেওয়ার ফলে এবারের বর্ষায় জলাবদ্ধতা কিছুটা কম হয়েছে, ফলে চরম জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়নি ঢাকাকে। 

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমিনবাজার বর্জ্য প্রকল্পকে দৃষ্টান্ত ধরে বিদেশি কোনো সংস্থার কাছে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়ে উন্নত কোনো মডেল বাস্তবায়ন করা যায় কিনা, তা নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।

হাওর প্রসঙ্গে তিনি জানান, হাওর সুরক্ষা আদেশ জারি করা হয়েছে। হাওরের ভেতরে কীভাবে হাউস বোটগুলো পরিচালিত হবে, তা নির্ধারণ করা হচ্ছে। আপাতত হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওর সুরক্ষায় কাজ চলছে।

নদী প্রসঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, দেশের নদীর তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে সুন্দরবন ও পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলো এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এজন্য নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটকে ঝুঁকিপূর্ণ নদীর তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর সীমান্তবর্তী নদীগুলোর তালিকা প্রণয়নের কাজও করা হবে।