নেপালে জেন-জি বিক্ষোভ, রাজধানীসহ তিন জেলায় কারফিউ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:০৯ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
ছবি: সংগ্রহিত।
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছিল। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ ললিতপুর ও ভক্তপুরে সংঘর্ষের পর কর্তৃপক্ষ আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কারফিউ জারি করেছে। যদিও সরকার সোমবার রাতেই এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।
সোমবার রাতের মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। এই পদক্ষেপ আসে জেন-জি তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের কারণে সৃষ্ট উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। এই নিষেধাজ্ঞা উঠলেও মঙ্গলবার কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুরের নির্দিষ্ট এলাকায় কারফিউ কার্যকর হয়েছে।
কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস রিং রোডের ভেতরের এলাকায় সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে। এই কারফিউ বল্কুমারী ব্রিজ, কোটেশ্বর, সিনামঙ্গল, গাউশালা, চাবাহিল, নারায়ণ গোপাল চৌক, গঙাবু, বলাজু, স্বয়ম্ভূ, কালাঙ্কি, বলখু এবং বাগমতী ব্রিজসহ পুরো রিং রোড এলাকায় কার্যকর থাকবে। ললিতপুর জেলা প্রশাসন সকাল ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকায় কারফিউ ঘোষণা করেছে। ভক্তপুর জেলা প্রশাসনও সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে। কারফিউ এলাকায় সব ধরনের চলাচল, জমায়েত, মিছিল, সভা ও অবস্থান নিষিদ্ধ।
সোমবার রাতেই তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং ঘোষণা করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া, সহিংসতা তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
গত বছর সুপ্রিম কোর্ট নেপালে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এ অনুযায়ী ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পরও অনেকে নিবন্ধন না করায় ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬টি প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জেন-জি তরুণরা বিক্ষোভ শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্রুত সরকারবিরোধী আকার নেয়। কাঠমান্ডুতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বিক্ষোভের চাপের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করেন, এবং প্রধানমন্ত্রী অলি সম্পর্কেও পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
তথ্যসূত্র : দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।
-টুটুল
