‘ইয়েস, ইউ আর মাই চাইল্ড’ : ঝর্ণা মনি
ঝর্ণা মনি
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৯:২০ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৬:২০ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার
ছবি কথা বলে। ছবি জীবন্ত ইতিহাস। ছবি মৃত্যুঞ্জয়ী। ছবি নিয়ে কথা বললে এমন কথাই প্রথমে সবার মনে উঁকি দেয়। ছবির ধরণ, মানুষ, সময় সব মিলেই কখনও কখনও কোনো কোনো ছবি হয়ে যায় ইতিহাসবিখ্যাত। কিছু ছবি চোখে জল ঝরায়। শিহরিত করে। উৎসুক মনে হাজারো প্রশ্নের ঢেউ তোলে। কিছু ছবি মনে নানান রঙের আল্পনা আঁকে। আবার কোনো ছবি ফিরিয়ে নিয়ে যায় অতীতের কোনো সোনালি কাব্যে। কিছু ছবি আবার চোখে সম্ভাবনাময় স্বপ্ন বোনে। অতি সাধারণ ছবিও কখনো সখনো ছবিবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের হৃদয় আর্দ্র করে। ভিজিয়ে দিতে চায় দীর্ঘদিনের পাওয়া না পাওয়ার হিসেবের খেরোখাতা।
একটি ছবি আসলে অনেক কিছুরই খোরাক। আজ বিকাল থেকে একটা ছবিতে আটকে গেছে চোখ-হৃদয়-মন। ছবিটি আহামরী কিছু নয়। আবার অনেক কিছুও বটে। অধিকার বঞ্চিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে মাতৃস্নেহে বুকে টেনে নিলেন শেখ হাসিনা। বললেন, ‘ইয়েস, ইউ আর মাই চাইল্ড।’
অনেকের কাছেই এটি নিছকই ছবি। রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শীদের কারো কারো কাছে হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার কৌশলী পদক্ষেপ মাত্র। নিন্দুকেরা হয়তো এই ছবির মাঝেও পুরানো রাজনীতির অন্ধ গলিতে দোষ খোঁজার মতোই হাজারো ত্রুটি খুঁজে বেড়াবেন।
কিন্তু ছবিটি দেখার পরপরই অন্যরকম এক অনভূতি ছুঁয়ে গেল হৃদয়কে। হাজার বছর ধরে বঞ্চিত আমাদের মানবসন্তানের একটি গোষ্ঠী হয়তো কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর হবে। হয়তো দিনের পর দিন সমাজের কাছে নিজেদের হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করে তাদের নির্মম বেঁচে থাকার দুঃখগাঁথার অবসান হবে। নিষ্ঠুর প্রকৃতির রূঢ় বাস্তবতা আর কুঠারাঘাত করবে না মানবিকতায়। হয়তো কফিনবন্দি বিবেককে জাগিয়ে তুলবে নতুন দিনের আবাহনে।
আমি ইতিবাচক মানুষ। চোখে জল আনা ছবিটি ইতোমধ্যেই আশা জাগানিয়া স্বপ্ন দেখাচ্ছে, এবার থেকে আর এদের কষ্ট থাকবে না। সমাজের অন্যদের মতোই কাজের সুযোগ পাবে। নিশ্চয়ই হাসু’বু আমাদের নিরাশ করবেন না। তার থার্ড জেণ্ডার সন্তানদের সত্যিকারের উন্নয়নে মায়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঝর্ণা মনি, সিনিয়র রিপোর্টার, বাংলাদেশ প্রতিদিন। নারীবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি।