ডাকবাক্স আজ চিঠির ইতিহাসের নীরব সাক্ষী
অনু সরকার
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:২১ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রবিবার
ছবি: সংগ্রহিত।
আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা সবকিছু মুহূর্তের মধ্যে পাঠাই—ইমেল, মেসেজ, সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু এক সময় ছিল যখন মানুষ চিঠির কাগজে নিজের ভাব, অনুভূতি, খুশি-দুঃখ সবই বেঁধে রাখতো। এক সময় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল এই চিঠি। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ যোগাযোগ মাধ্যম। চিঠি লেখা শুধু তথ্য আদান-প্রদান ছিল না, এটি ছিল এক ধরনের অনুভূতির যাত্রা।
ডাকবাক্স সেই যাত্রার নীরব সাক্ষী। একদম সাদাসিধে, রঙিন বা ধূসর—যতই হোক, প্রতিটি ডাকবক্স অসংখ্য গল্পের ভান্ডার। কোনো চিঠি হয়তো প্রিয়জনের কাছে যায় আনন্দের খোরাক হিসেবে, আবার কোনো চিঠি থাকে দুঃখ বা বিরহের কথা বলার জায়গা। ডাকবক্সের ফাঁক দিয়ে যে চিঠি পড়ে যায়, সেটি যেন সময়কে থামিয়ে দেয়—শব্দহীন, নিঃশব্দ প্রমাণ যে মানুষের অনুভূতি চিরকাল অম্লান থাকে।
আজও, কেউ কেউ ডাকবাক্সে চিঠি ফেললে সেই ছোট্ট বাক্স থেকে পাওয়া অদ্ভুত ধরনের শান্তি ও আনন্দ অনুভব করে। মেলবোর্ডের ভেতর যে চিঠি জমা থাকে, সেটি শুধু কাগজ নয়, একটি গল্প, এক স্মৃতি, এক অনুভূতি।
ডিজিটাল যুগে আমরা অনেক দ্রুত সবকিছু শেষ করতে চাই, কিন্তু ডাকবক্সের নীরবতা মনে করিয়ে দেয়—কিছু অনুভূতি, কিছু বার্তা, ধীরে ধীরে, ধীরে পৌঁছালে আরও শক্তিশালী হয়।
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে চিঠি আদান-প্রদান প্রায় বিলুপ্তির মুখে। এখন ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের সাহায্যে চাইলেই টুক করে মেসেজ পাঠানো যায়।
আগেকার সময়ে তথ্য আদান-প্রদানে বেশ সময় লাগতো। কখনও তো এই চিঠি কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে সপ্তাহ, মাস সময় লাগতো। তবে চিঠি পাওয়ার মতো আনন্দের সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা হয় না।
তাই, আজও যদি কোনো ডাকবাক্সের সামনে দাঁড়াই, হয়তো আমরা শুধু চিঠি ফেলছি না, আমরা আমাদের মানবিক স্পন্দন, আমাদের গল্প, আমাদের আবেগ সেখানে রেখে যাচ্ছি।
