‘স্বীকৃতিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কাছাকাছি হয়েছে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার
ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আগাবেকিয়ান শাহিন বলেছেন, যেসব দেশ আজ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তারা এক স্থায়ী পদক্ষেপ নিয়েছে। এই স্বীকৃতি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সুরক্ষা এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের গতি ফের জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা হলেও ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র এর কড়া সমালোচনা করেছে।
রামাল্লায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাহিন বলেছেন, ‘‘এখনই সেই সময়। আগামীকাল একটি ঐতিহাসিক দিন, যা আমাদের গড়তে হবে। এটি শেষ নয়।’’
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটি এমন এক পদক্ষেপ যা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। হয়তো এটি আগামীকাল যুদ্ধ বন্ধ করবে না, তবে এেই পদক্ষেপ সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ, যা নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।
এদিকে, পশ্চিমা তিন দেশের ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি কয়েকজন মন্ত্রী এই স্বীকৃতিকে অপ্রাসঙ্গিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, স্বীকৃতি বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। তাদের দাবি, সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই কেবল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘‘কখনোই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না’’ বলে ঘোষণা দেন।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহিন বলেন, আলোচনার কোনও ইচ্ছাই ইসরায়েলের নেই। তিনি বলেন, এই মাসের শুরুতে নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরের দখলকৃত অঞ্চলে নতুন একটি বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্ত উত্তরের ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়কে দক্ষিণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।
তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি মোটেও প্রতীকী নয়। এটি একটি কার্যকর, বাস্তব এবং স্থায়ী পদক্ষেপ। যারা সত্যিই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে রক্ষা করতে চান, তাদের অবশ্যই এই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বর্তমানে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পদক্ষেপ জোরাল করার আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ফ্রান্স এবং সৌদি আরব। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আরও কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি এই প্রচেষ্টাকে ‘অকার্যকর এবং বৈরী’ বলে মন্তব্য করেছেন। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রমবর্ধমান চাপের মাঝেও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বসতি স্থাপন ও পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনায় আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
চলতি বছর বৈশ্বিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে ক্রমবর্ধমান বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্র গাজায় চলমান ইসরায়েলি যুদ্ধের নিন্দা জানিয়েছে। এমনকি কিছু দেশ ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে; যারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শাহিন বলেন, ইসরায়েলের ওপর রাজনৈতিক চাপকে অর্থনৈতিক পদক্ষেপে রূপান্তরিত করতে হবে, যাতে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া যায়।
তিনি বলেন, আজ গাজা জ্বলছে। আজ গাজা ধ্বংস হচ্ছে। গাজায় মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ করেছেন। যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
