নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, আত্মবিশ্বাসী যাত্রা জ্যোতিদের
খেলাধুলা ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৪৭ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
ছবি: সংগ্রহিত।
বিশ্বকাপের আগেই বাংলাদেশ সম্ভবত একটি রেকর্ড গড়ে ফেলছে। টানা পাঁচ মাস কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপ অভিযানে গেছে আর কবে কোন দল! সেই ঘাটতি অনুভব করতে পারছেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। তার পরও মনের কোণে স্বপ্নের উঁকিঝুঁকি তো আছেই। বিশ্বকাপে ভালো কিছুই উপহার দিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া আইসিসি নারী বিশ্বকাপ এবার হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। আসরে দ্বিতীয়বার অংশ নিতে আজ ঢাকা ছাড়বে জ্যোতির দল। কলম্বোতে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের পর ২ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মূল লড়াই। লিগ পর্বে বাংলাদেশের বাকি ছয়টি ম্যাচই ভারতে। মূল বিশ্বকাপ শুরুর আগে শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন মেয়েরা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল ম্যাচটিই সত্যি বলতে সবার আগে। গত বিশ্বকাপে পাকিস্তানকেই কেবল হারাতে পেরেছিলেন নিগাররা। এবারও শক্তি-সামর্থ্য বিবেচনায় এই ম্যাচেই কিছুটা সম্ভাবনা আছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আরও উন্নতি করেছে পাকিস্তানিরা। শক্তি-সামর্থ্যে নাগালের মধ্যে আছে শ্রীলঙ্কাও।
বিসিবিতে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে কোচ ইমরান জানালেন, তাদেরও বিশেষ দৃষ্টি আছে এই দুই ম্যাচের দিকে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিটি ম্যাচ ধরে খেলা ও ভালো খেলা। আমাদের দুটি ম্যাচে ভালো সুযোগ আছে, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এছাড়া অন্যান্য দলের সঙ্গেও আমরা... কাউকে বড় করে দেখছি না।’
তিনি বলেন, ‘শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব। প্রতিটি ম্যাচই জেতার জন্য খেলব। তবু অস্ট্রেলিয়া বা আরও দুই-একটা দলের যে স্ট্যান্ডার্ড, তাদেরকে আমরা নিজেদের চেয়ে অনেক ওপরে দেখব না। আমাদের মতো ভাবব এবং জেতার জন্যই খেলব প্রতিটি ম্যাচ। গত বিশ্বকাপে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছি। এবার আরও কিছু ম্যাচ জেতার জন্য যাচ্ছি।’
সেই লক্ষ্য পূরণের পথে বড় ঘাটতি আসলে লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলা। গত এপ্রিলে পাকিস্তানে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পর আর কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেনি বাংলাদেশ। লম্বা সময় ধরে অবশ্য প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছেন নিগাররা। সেটিকেই এখন ভরসা মানছেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই (বড় দলের সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো হতো)... আদর্শ প্রস্তুতি হয়তো হয়নি। তবে আমি মনে করি, বাংলাদেশে যত ধরনের ফ্যাসিলিটি আছে, সবগুলো আমরা পেয়েছি। এখনও পর্যন্ত আমরা যতগুলো ক্যাম্প করেছি, সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। চেষ্টা তো করা হয়েছে। তবে যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি না। যেভাবে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমার মনে হয় ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
প্রস্তুতি পর্বের একটি পর্যায়ে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের সংস্পর্শ পেয়েছে গোটা দল। পাওয়ার হিটিংয়ের কিছু কৌশল নিয়ে ধারণা তখন পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। তবে ছোট্ট সেই পর্ব থেকেই দারুণ কিছুর আশা দেখালেন না নিগার, ‘এত অল্প সময়ে তো অত বেশি কাজ করা যায় না। তবু বলব যে, ভালো অভিজ্ঞতা। আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে যে বিষয়গুলো ছিল... উনি পাওয়ার হিটিং শেখাতে চেয়েছেন। তবে এত অল্প সময়ে আসলে মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন। আমরা যে ফরম্যাট খেলতে যাচ্ছি... অবশ্যই সেখানেও পাওয়ার হিটিং দরকার আছে। তবে ছোট-ছোট কিছু কাজ, যেগুলো তিনি করে গেছেন, ক্রিকেটাররা সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে অবশ্যই ম্যাচে অনেক কাজে লাগবে।’
গত কয়েক বছরে মেয়েদের ক্রিকেট বদলে গেছে অনেক। পাওয়ার ক্রিকেট, চার-ছক্কার জোয়ার আর রানের স্রোত দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি। সম্প্রতি ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তো বটেই, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান সিরিজেও দেখা গেছে প্রচুর রান উঠেছে। বাংলাদেশের সেখানে সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস মাত্র ২৭৬ রানের। পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে ২৫০ রানের বেশি করার নজির নেই এখনও।
নিগারের অবশ্য প্রবল বিশ্বাস, ভালো উইকেট পেলে তারাও বড় স্কোর গড়তে পারবেন। নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানে (বিশ্বকাপ বাছাইয়ে) যেখানে খেলেছি, সেখানে ওয়ানডেতে গড় ছিল ১৮০ রানের কাছাকাছি। আমরা সেখানে নিয়মিত ২০০ রানের বেশি করেছি। তার মানে, ভালো উইকেটে গেলে আমাদের ব্যাটারদের ভালো একটা স্কোর দেওয়ার সামর্থ্য আছে। আপনারা তো জানেন, আমাদের বোলাররা বরাবরই অনেক ভালো। দলের জন্য ভালো করে আসছে। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, ভালো সুযোগ। আইসিসি টুর্নামেন্টে যদি ভালো একটা স্কোর দাঁড় করাতে পারি, তাহলে ওই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী আমরা লড়াই করতে পারব।’
