ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৫:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:০৭ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী

নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী

নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর ১২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৩ সেপ্টেম্বর। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র নারী নবাব। উপমহাদেশের নারী শিক্ষার অগ্রদূত তিনি। উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম নারী কবি-সাহিত্যিক।
কুমিল্লার লাকসামের পশ্চিম গাঁওয়ের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে ১৮৩৪ সালে ফয়জুন্নেছার জন্ম। বাবা আহমেদ আলী চৌধুরী ছিলেন তৎকালীন জমিদার। ফয়জুন্নেছা নিজের অদম্য ইচ্ছার কারণেই শিক্ষিত হয়ে উঠেছিলেন। তার শিক্ষাগুরু মৌলভি ওস্তাদ তাজউদ্দীন মিয়ার তত্ত্বাবধানে তিনি ঘরে বসেই বাংলা, আরবি, ফারসি ও সংস্কৃতি ভাষা শিখেছিলেন। ১৮৬০ সালে মোহাম্মদ গাজী চৌধুরীকে বিয়ে করেন মহীয়সী এই নারী। আরশাদুন্নেছা ও বদরুন্নেছা নামে দুই মেয়ে ছিল তার।
শিক্ষাবিস্তারে নবাব ফয়জুন্নেছার অবদান ছিল উল্লেখ করার মতো। ১৮৭৩ সালে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পশ্চিম পাড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন নবাব ফয়জুন্নেছা। পরে সেটি শৈলরাণী প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। একই বছরে কুমিল্লার বাদুরতলায় ফয়জুন্নেছা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এটি বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নামে পরিচিত। 
তার জমিদারির আওতায় ১৪টি কাছারিসংলগ্ন এলাকায় ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া ফয়জুন্নেছা তার নিজের বাড়ির পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন একটি মাদ্রাসা। সেটি বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ নামে পরিচিত। ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে হজ পালন করতে গিয়ে মক্কার মেছপালা মহল্লায় একটি মুসাফিরখানা ও একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন তিনি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার কৃষ্ণনগরেও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভারতবর্ষের একমাত্র মুসলিম নারী নবাব ফয়জুন্নেছা।
মানবতার সেবায় ফয়জুন্নেছা কুমিল্লায় ফয়জুন্নেছা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের ফয়জুন্নেছা নারী ও শিশু ওয়ার্ড নামে পরিচিত। 
শিক্ষা বিস্তারে প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি তিনি সাহিত্যও রচনা করেছিলেন। ১৮৭৬ সালে ফয়জুন্নেছা রচনা করেন ‘রূপজালাল’ নামে একটি গ্রন্থ। এ ছাড়া ‘সঙ্গীত লহরী’ ও ‘সঙ্গীতসার’ নামে দুটি গীতিকাব্যও রয়েছে তার। 
মানবতার কল্যাণে সারাজীবন নিজেকে উৎসর্গ করা নবাব ১৯০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মারা যান। ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে মসজিদের পাশেই রয়েছে তার কবর।