ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৫৪:৫৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মিসরে পরোক্ষ আলোচনা শুরু করেছে হামাস ও ইসরায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০৩ এএম, ৭ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা ‘শান্তি’ পরিকল্পনা নিয়ে মিসরে পরোক্ষ আলোচনা শুরু করেছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দ্রুত শান্তিচুক্তি করতে উভয় পক্ষকেই চাপ দেওয়া হচ্ছে। মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হওয়া ওই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছে ইসরায়েল। হামাসও কিছু প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। তবু বেশ কয়েকটি বড় অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গেছে। মিসরের শুরু হওয়া পরোক্ষ আলোচনা আজ মঙ্গলবারও চলবে।

গাজা সংঘাতের দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালান হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।

মিসরে এই পরোক্ষ আলোচনার কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয় হামাসের পক্ষ থেকে ট্রাম্প প্রস্তাবিত ২০ দফা অনুসারে বন্দিবিনিময় প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পর। ওই পরিকল্পনায় ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষকেই ‘দ্রুত পদক্ষেপ নিতে’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার হোয়াইট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট মিসরে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আলোচনা কত দিন চলবে, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। লেভিট বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি যুদ্ধবিরতি চান, তিনি চান জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হোক। এসব আলোচনা চলছে।

ট্রাম্প গত রোববার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, এই সপ্তাহান্তে হামাসের সঙ্গে অত্যন্ত ইতিবাচক কথা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও গাজায় যুদ্ধের অবসান ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে কথা হয়েছে। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অবশেষে মধ্যপ্রাচ্যে সেই দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প তাঁর ২০ দফা প্রস্তাবের প্রথম ধাপটি এই সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন করতে জোর দিয়েছেন। রেডক্রস জানিয়েছে, তারা জিম্মি ও বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে এবং গাজায় সহায়তা পৌঁছে দিতে প্রস্তুত।

এর আগে মিসরসহ কয়েকটি দেশ বলছে, মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা টেকসই যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বাস্তব সুযোগ তৈরি করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আশা প্রকাশ করেছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব হতে পারে।

হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানিয়েছেন, যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু করতে আগ্রহী হামাস। তবে তা মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মিসরে আলোচনা শুরুর আগে রোববার গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিমান হামলার মধ্যেই বন্দী মুক্তি সম্ভব নয়, তাই হামলা বন্ধ করতেই হবে। তিনি আরও বলেন, আলোচনার মাঝখানে যুদ্ধ চলতে পারে না। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও হামলা বন্ধ করেনি ইসরায়েল।

মিসরে আলোচনায় কারা আছেন

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গতকাল তাঁর প্রতিনিধিদলের মিসরে বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হামাস জানিয়েছে, তাদের প্রধান আলোচক খলিল আল-হায়া ওই আলোচনায় একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পও মিসরে দুজন বিশেষ দূত পাঠিয়েছেন। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক আলোচক স্টিভ উইটকফ।