ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১২:১৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

চাকসুতে চার ভাষায় প্রচারপত্র ছাপিয়ে নজরে সুমাইয়া

চবি প্রতিনিধি

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:২৫ এএম, ৮ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

একাডেমিক ভবন, বিভিন্ন অনুষদের ঝুপড়ি, বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পোস্টারে ছেয়ে গেছে। লিফলেট, প্রচারকার্ড হাতে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা দলবেঁধে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের কাছে। দিন-রাত চালাচ্ছেন আনন্দমুখর প্রচার। সব মিলিয়ে ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে যেন চলছে উৎসব।

এরই মধ্যে একটি লিফলেট সবার নজর কেড়েছে। সেটিতে বাংলা, চাকমা, মারমা ও চাটগাঁইয়া ভাষায় অভ্যর্থনা জানিয়ে রয়েছে শুভেচ্ছাবার্তা। আছে ইশতেহার ও কিউআর কোড। 

প্রচারপত্রটি তৈরি করেছেন চাকসুর নির্বাহী সদস্য প্রার্থী মীর সুমাইয়া আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন ভাষাভাষী শিক্ষার্থী আছেন। সব ভাষার শিক্ষার্থীদের কাছে সহজে পৌঁছাতে এ উদ্যোগ নিই। একজন সিনিয়র ভাইয়ের পরামর্শ থেকেই ধারণাটি পাই। পরে নিজের মতো করে সেটি পরিপূর্ণ করি। ছাপাখানায় তিন দিন দৌড়াদৌড়ি করে তৈরি করেছি।’ এই প্রচারপত্র হাতে পাওয়া শিক্ষার্থীরাও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। 

মীর সুমাইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ নেতিবাচক মন্তব্য করেননি। অনেকেই মজা করে বলেছেন, নোয়াখাইল্যা বা সিলেটি রাখলেন না কেন? আমি হেসে বলেছি, সামনে চাকসু নির্বাচন হলে ওগুলোও রাখব।’

পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ৯ দিনের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ঐতিহ্যবাহী ঝুপড়িগুলোসহ সর্বত্র যেন কোমর বেঁধে প্রচারে নেমেছেন ১৩ প্যানেলের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। গতকাল মঙ্গলবার ক্যাম্পাসের প্রতিটি মোড়ে, ঝুপড়ি, শহীদ মিনার ও হলে হলে প্রচারণা চালিয়েছেন ৯০৭ প্রার্থী। চোখে ঘুম নেই তাদের। ১৩ অক্টোবর রাতে শেষ হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার। ১৫ অক্টোবর হবে ভোট। ৩৬ বছর পর হচ্ছে চাকসু নির্বাচন।

ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার এলাকায় গতকাল কথা হয় দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মাছুদ রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে হাসিখুশি প্রচারণা দেখছি। নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় যেন ফিরে পেয়েছে প্রাণ। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় হোক শিক্ষার্থীবান্ধব।’

সমাজবিজ্ঞান ঝুপড়িতে দেখা যায়, ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাকিব মাহমুদ রুমি প্রচারে ব্যস্ত। তিনি ঝুপড়িতে আড্ডারত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচারপত্র তুলে দিচ্ছেন। রুমি বলেন, ‘পুরো ক্যাম্পাস নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। সবাই আনন্দঘন পরিবেশে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।’ একটু এগোতেই কলাভবন ঝুপড়িতে দেখা যায় ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেলের ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক প্রার্থী সুমাইয়া শিকদার প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর কাছে যাচ্ছি। তাদের সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করছি। প্রতিশ্রুতিগুলো তাদের জানাচ্ছি। ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, নারী প্রার্থী তুলনামূলক কম। আমরা সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবেশ তৈরি করতে চাই। চাকসু হোক নারীবান্ধব ও নিরাপদ নেতৃত্বের ক্ষেত্র।

জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, প্যানেলের বাইরে থেকে এককভাবে নির্বাচন করছি। শিক্ষার্থীদের কথা বলার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। সবাই যেভাবে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন, তা সত্যিই আনন্দদায়ক। চবির শহীদ মিনার চত্বরে কথা হয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাওসিফ হোসেন আনন্দের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। উৎসবমুখর পরিবেশটা সত্যিই উপভোগ্য। সকলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক লক্ষ্য করছি। এটি যেন নির্বাচনের পরও বিদ্যমান থাকে। সবার কাছে আহ্বান করছি, চাকসু যেন দলীয় রাজনীতির বাইরে গিয়ে সব শিক্ষার্থীর জন্য হয়।