হারের পর ফুটবলারদের মানসিকতা ও আচরণ নিয়ে প্রশ্ন কোচের
ক্রীড়া প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৯:৫৫ এএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ শনিবার
ছবি: সংগৃহীত
এশিয়া কাপের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে দু'টি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ব্যাংককে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে আফিদা-ঋতুপর্ণারা ০-৩ গোলে হেরেছেন। এই হারের পর বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার ফুটবলারদের মানসিকতা ও আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাফুফের পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বাটলার বলেন, ‘কয়েকজন ফুটবলার ভুল মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এমন অমনোযোগী মনোভাব আমি কিছুতেই সহ্য করব না। কেউ যদি আমার দলে খেলতে চায়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তাহলে এমন মানসিকতা নিয়ে আসতে পারবে না যা জাতীয় দলের সঙ্গে মানানসই নয়।’
বাটলার আজ ম্যাচের মধ্য বিরতির সময় তহুরা ও মুনকির পরিবর্তে সাগরিকা ও রিপাকে নামান। ৭০ মিনিটে এক সঙ্গে অধিনায়ক আফিদা, ঋতুপর্ণা, শামসুন্নাহার, শিউলি আজিমের পরিবর্তে হালিমা, জয়নব বিবি, নবিরন ও শিখাকে নামান। ম্যাচ পরবর্তী কোচের বার্তায় সিনিয়রদের মনোভাব ও নিবেদনকেই যেন ইঙ্গিত করলেন বাটলার, ‘এমন খেলোয়াড়দের খেলাতে পেরে আমি খুশি যারা বড় কোনো নাম নয় কিন্তু সঠিক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামে। তারা কঠোর পরিশ্রম করতে চায়, উন্নতি করতে চায়। কেউ আমার পরীক্ষা নিতে চাইলে নিক। এমনটা আগেও হয়েছে, আবারও হলে আমি নিজের জায়গায় শক্ত থাকব। অসম্মান ও বাজে আচরণ সহ্য করব না।'
সাবিনা, মাসুরা,কৃষ্ণা ও সানজিদাদের সঙ্গে বাটলারের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ভুটান লিগে তারা পারফরম্যান্স করলেও কোচ তাদের প্রাথমিক দলেও ডেকে পরখ করেননি। আজ কোচ খেলার পর যেভাবে বললেন,' এমন খেলোয়াড়দের খেলাতে পেরে আমি খুশি যারা বড় কোনো নাম নয়' শিখা,নবিরনদের তিনি যাদের পরিবর্তে খেলিয়েছেন তারা আফিদা, ঋতুপর্ণা, শামসুন্নাহার ও শিউলি আজিম। ফলে কোচের মন্তব্যের মধ্যেই সিনিয়র ও তারকা খেলোয়াড়দের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব স্পষ্ট। ম্যাচটি ক্লোজড ডোর ও লাইভ সম্প্রচার না হওয়ায় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ও আচরণের বিষয়ে কোচের বক্তব্যই ভরসা আপাতত।
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে খেলবে। ১২ দলের এশিয়া কাপের মধ্যে শীর্ষ আটের মধ্যে থাকতে পারলে ২০২৭ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ রয়েছে। এমন অবস্থায় বাফুফে যখন দলের প্রস্তুতি নিয়ে পরিকল্পনায় ব্যস্ত। তখন কোচের এমন মন্তব্য আবার সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
থাইল্যান্ড যাওয়ার আগে কোচ বাটলার দুই ম্যাচই জিততে চেয়েছেন। বাংলাদেশ দলের অন্যতম গুরুত্বপর্ণ খেলোয়াড় স্বপ্না রাণীকে তিনি খেলাননি। সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ফুটবলার উঠিয়ে জুনিয়র ফুটবলার তিনিই নামিয়েছেন। তাদের খেলানোর পর বিস্ময়করভাবে নিজেই বলেন ম্যাচটি নাকি জাতীয় দলের মতো লাগেনি তার,‘আমরা প্রচুর তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছি—শিখা, নবিরণ, জয়নব, সাগরিকা, মুনকি, রিপা ও হালিমা। ম্যাচটি আসলে জাতীয় দলের ম্যাচের মতো লাগেনি। বরং উন্নয়নমূলক/প্রস্তুতি ম্যাচের মতো লাগছিল। ভবিষ্যতে এমন ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।'
ফুটবলারদের কড়া সমালোচনার পর আয়োজক থাইল্যান্ডকেও এক হাত নিয়েছেন কোচ। ম্যাচটি ফিফা স্বীকৃতি টায়ার-১ শ্রেণীর। ম্যাচের আয়োজন ও সুযোগ-সুবিধা তার কাছে এই পর্যায়ের মনে হয়নি, ‘আমি জানি না আদৌ এটি টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচ ছিল কি না। কারণ আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে এমন পরিবেশে খেলেছি, যেখানে আলোর মাত্রা অতোটা ভালো ছিল না। আমার মতে এই ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক কিছু পেয়েছি আমরা। হার-জিতের চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি শেখার প্রক্রিয়া এবং সম্মানের বিষয়।’
