ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:১০:৪৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

টেবিলের নিচে বাঁচতে চেয়েছিলেন মারজিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৬ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ১২ দিন পর পোড়া ধ্বংসস্তূপের টেবিলের নিচ থেকে পুড়ে অঙ্গার অবস্থায় একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের ধারণা, আগুন থেকে জীবন বাঁচাতে তিনি হয়তো সেই টেবিলের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তবে একটি পরিবার দাবি করেছে, আজ উদ্ধার হওয়া লাশটি মারজিয়া সুলতানার। একই ঘটনায় তার স্বামী জয় মিয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।

রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে সংবাদের ভিত্তিতে রূপনগর থানা পুলিশ মিরপুর শিয়ালবাড়িতে ১২ দিন আগে অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ওই পোশাক কারখানার তৃতীয় তলা থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, সন্ধ্যার দিকে পোশাক কারখানার তৃতীয় তলার কাপড়চোপড়সহ নানা জিনিসের ধ্বংসস্তূপ ও একটি টেবিলের নিচ থেকে পুড়ে অঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়। যতটুকু জানা গেছে, এটি একজন নারীর লাশ। একই ঘটনায় তার স্বামীও মারা গেছেন। তবে স্বামীর লাশ শনাক্ত করে পরিবারের লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছেন। পরিবার অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রীর লাশের জন্য।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৬টি লাশ ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ উদ্ধার হওয়া লাশ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭। এই লাশও ডিএনএ পরীক্ষার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

মারজিয়া সুলতানার বাবা সুলতান মিয়া জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার নুরুল্লা গ্রামে। স্বামী জয় মিয়ার সঙ্গে একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন মারজিয়া। ঘটনার পর জয়ের লাশ পাওয়া গেলেও নিখোঁজ ছিলেন মারজিয়া। বারবার পুলিশের কাছে জানানো সত্ত্বেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্বাস ছিল, মারজিয়ার লাশ ওই ভবনেই রয়েছে। এজন্য আমরা বারবার ভবনটিতে খোঁজার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কেউ সুযোগ দিচ্ছিল না। রোববার বিকেলে থানায় গিয়ে পুলিশ নিয়ে ভবনে খোঁজ করি। এক পর্যায়ে তৃতীয় তলায় কাপড়চোপড় ও মেশিনের স্তূপের নিচে চাপা পড়া একটি লাশ পাই। সেটিই আমার মেয়ের লাশ। তার পরনের বোরখা দেখে চিনতে পেরেছি।”

গত ১৪ অক্টোবর সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, ওই গুদামের মুখোমুখি ছিল একটি পোশাক কারখানা। রাসায়নিকের গুদামের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেই পোশাক কারখানাতেও।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর কারখানার ভেতর থেকে দুই ধাপে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কয়েক দিন ধরে ডাম্পিংয়ের কাজ চালিয়ে আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে বলে ঘোষণা দেন। তখন জানানো হয়েছিল, সেখানে আর কোনো লাশ নেই।

তবে রোববার পুলিশ একই পোশাক কারখানা থেকে আরও একটি লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তারা বিষয়টি শুনেছেন, তবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।