সুদানে ভয়াবহ ড্রোন হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ৪০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:৪৪ এএম, ৪ নভেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
ছবি: সংগ্রহিত।
সুদানের উত্তর করদোফান প্রদেশে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর চালানো এক ড্রোন হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৪০ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই হামলা সুদানের চলমান সংঘাতে বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার এক নতুন মাত্রা যুক্ত করল। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সোমবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরে আল-ওবেইদ শহরের পূর্বাঞ্চলীয় আল-লুয়াইব গ্রামে এ হামলা চালানো হয়। এক স্থানীয় কর্মকর্তা জানান, ড্রোন থেকে নিক্ষিপ্ত বোমাগুলো সরাসরি বেসামরিক নাগরিকদের একটি সমাবেশে পড়ে, যেখানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান চলছিল। হামলার দায় স্বীকার না করলেও সরকারি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, হামলার পেছনে আরএসএফ-ই দায়ী। সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে।
প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত বড় একটি তাঁবুকে লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়। সেখানে উপস্থিত শতাধিক মানুষের মধ্যে বহু নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। হামলার তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ৪০ জন, আরও অনেকে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এটি উত্তর করদোফানে বেসামরিক জনগণের ওপর র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের নতুনতম অপরাধ, যা মানবতার বিরুদ্ধে এক সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, আরএসএফ-কে অবিলম্বে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করতে। তাদের দাবি, এই বাহিনী নিয়মিতভাবে নিরস্ত্র বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।
অন্যদিকে, আরএসএফ সম্প্রতি ঘোষণা করেছিল যে, তারা শিগগিরই আল-ওবেইদ শহরে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাবে। তারা স্থানীয়দের নিরাপদ করিডোর ব্যবহার করে শহর ত্যাগেরও নির্দেশ দিয়েছিল। এই ঘোষণার পরই সোমবারের হামলা, যা এখন অনেকের কাছে সেই হুমকির বাস্তব রূপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, অক্টোবরের শেষ দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ করদোফানে নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্তত ৩৮ হাজার মানুষ নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। যুদ্ধের কারণে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবার মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে অঞ্চলে।
চলমান সংঘাতে আরএসএফ সম্প্রতি উত্তর করদোফানের বারা শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে বেসামরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা। এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ উত্তর দারফুর প্রদেশের রাজধানী আল-ফাশের শহর দখল করে, যেখানে বেসামরিকদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ উঠে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সেই সময় সতর্ক করেছিল—এই সংঘাত সুদানের ভৌগোলিক বিভাজনকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।
তথ্যসূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড
