শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ না বাড়ার কারণ
উইমেননিউজ ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৩৫ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত
সূর্যালোকের সংস্পর্শে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয়। আমরা সাধারণত সকালে কিংবা দুপুরে সূর্যালোকের সংস্পর্শ থেকে ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণ করে থাকি। এ ছাড়া বাকিটা মেলে দুধ, কড লিভার অয়েল, তৈলাক্ত মাছ এবং বিশেষ কিছু খাবার থেকে। এরপরও শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর সাধারণত বয়স বেশি হোক কিংবা কম— ভিটামিন ডির ঘাটতিতে ভুগে থাকেন যে কোনো বয়সেরই মানুষ। আর এটি এমন এক ভিটামিন, যা প্রয়োজনের তুলনায় কমে গেলে কোমরে, কাঁধে ব্যথা, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া— এমনকি অবসাদের মতোও সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর সে অভাব পূরণ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা সাপ্লিমেন্ট কিংবা ওষুধ গ্রহণ করে থাকি। এতে ভিটামিন ডি২, ডি৩ দুই-ই থাকে।
ওষুধ খেলে ভিটামিনের ঘাটতি দূর হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে তা হয় কী? এ বিষয়ে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কখনো কখনো ব্যতিক্রম হয়। সাপ্লিমেন্ট খেয়ে, খাবার খেয়ে, গায়ে রোদ লাগিয়েও ভিটামিন 'ডি'র ঘাটতি মেটে না। মূলত এর কারণ একটা নয়; হতে পারে একাধিক।
ওষুধ কিংবা সাপ্লিমেন্ট খেলেই দ্রুত ভিটামিন ডি'র ঘাটতিপূরণ হবে, এ ভাবনা মোটেও ঠিক নয়। টানা ওষুধ খাওয়ার ১২ সপ্তাহ পর পরীক্ষা করে দেখুন রিপোর্ট কী বলছে। ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়া জরুরি। কারণ ভিটামিন 'ডি' শোষণের জন্য ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োজন। শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে প্রভাব পড়বে ভিটামিন 'ডি' শোষণেও।
এ ছাড়া স্টেরয়েড, কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ বা বিশেষ কিছু ওষুধ ভিটামিন 'ডি' শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন— কলা, পালংশাক, বাদাম, দানাশস্য রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। স্টেরয়েড কিংবা কোলেস্টেরলের ওষুধ নিয়মিত খেলে চিকিৎসকের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে কথা বলা জরুরি।
আর যে ভুলটি অনেকেই করে থাকেন, তা হলো— খালি পেটে কিংবা খুব কম ফ্যাটযুক্ত খাবার খেয়ে ভিটামিন 'ডি' ওষুধ খাওয়া। ভিটামিন ডি ফ্যাটে দ্রবীভূত ভিটামিন। ফলে খাবারের তালিকায় সঠিক মাত্রায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট না থাকলে শরীরের পক্ষে ভিটামিন শোষণ করা সম্ভব হয় না। সে জন্য ভিটামিন 'ডি' ওষুধ খাওয়ার আগে ডিম, দুধ বা বাদামজাতীয় খাবার খান। কারণ এতে ফ্যাট থাকে।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ লাভলিন কৌর বলেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গাজর রাখুন। কারণ গাজর ভিটামিন 'ডি' শোষণে সাহায্য করে। ফলে গাজরের সালাদ খেয়ে ভিটামিন 'ডি' ওষুধ খাওয়া উচিত। এমন খাবার তালিকায় রাখা যেতে পারে।
এ ছাড়া পেটের স্বাস্থ্যের দিকে নজর না দিলেও ভিটামিন 'ডি' শোষণে সমস্যা হতে পারে। সেলিয়্যাক ডিজিজ, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম, দীর্ঘ সময় ধরে অম্বলের সমস্যা থাকলে ভিটামিন 'ডি'র ঘাটতি হতে পারে। তখন ওষুধ খেলেও ভিটামিনের অভাব দূর করা যায় না। আর অতিরিক্ত ওজন, স্থূলত্ব ভিটামিন 'ডি'র কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। এটি ফ্যাটে দ্রবীভূত ভিটামিন।
মেদ বাড়লে ভিটামিন 'ডি' ফ্যাটের মধ্যে সঞ্চিত হতে শুরু করে। ফলে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। আর ওষুধ খেলেও স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় না। এর সমাধান হলো— হাঁটা এবং শরীরচর্চা করা। মেদ ঝরানোর চেষ্টা করা। ব্যায়াম করলে শরীর সচল থাকবে। ভিটামিন 'ডি'র কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।
