প্রতিরোধই স্তন ক্যান্সারের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:৫৯ এএম, ৯ নভেম্বর ২০২৫ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
স্তন ক্যান্সার নিয়ে যত উদ্বেগ, তার বড় অংশই ঝুঁকি নয় বরং দুর্বল সচেতনতাবোধ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সময়মতো পরীক্ষা, আত্মপরীক্ষার অভ্যাস আর নিজের প্রতি খানিক দায়িত্ববোধ— এই তিনটি মিলেই রোগটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে আটকে দেওয়া সম্ভব। চিকিৎসার জটিল পথের চেয়ে প্রতিরোধই অনেক বেশি কার্যকর, সহজ এবং সবার নাগালের মধ্যে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে “আমরা নারী” এবং “আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট” আয়োজিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
আলোচনায় চিকিৎসক, সংগঠক ও শিক্ষাবিদরা জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকেই দেরিতে চিকিৎসা নেন; অথচ নিয়মিত স্ক্রিনিং, সচেতনতা এবং শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু হওয়া স্বাস্থ্যশিক্ষা এই মৃত্যুঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন। তিনি বলেন, “স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা আর নিজের প্রতি যত্নশীল থাকা। প্রতিটি নারী যদি নিজের শরীর সম্পর্কে বোঝেন, ব্যথা–অস্বস্তি বা পরিবর্তনগুলো খেয়াল করেন, তাহলে উপকৃত হবে পুরো পরিবার ও সমাজ।”
সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. খাদেমুল বাশার বলেন, “ক্যান্সারমুক্ত সমাজ চাইলে সচেতনতার বীজ রোপণ করতে হবে শিক্ষাঙ্গনেই। শিক্ষার্থীরা যদি শিখে ফেলে কীভাবে নিজেদের যত্ন নিতে হয়, তারা ঘরে ফিরে পরিবারকেও সচেতন করবে। এভাবেই তৈরি হয় সামাজিক আন্দোলন।”
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এম. এম. জাহিদুর রহমান (বিপ্লব) বলেন, “আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান নারীর অধিকার, নিরাপদ খাদ্য, স্বাস্থ্য ও সচেতনতা নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করে। আমাদের লক্ষ্য— প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সচেতনতার দূত হিসেবে গড়ে তোলা।”
আমরা নারী-র নির্বাহী সদস্য রোখসানা আক্তার রূপী বলেন, “স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৩ হাজার নারী আক্রান্ত হন, যাদের অর্ধেক মারা যান দেরিতে চিকিৎসা পেতে পেতে। নিয়মিত আত্মপরীক্ষা, সচেতনতা আর প্রথম দিকে চিকিৎসা নিলে এই মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে কমে যেতে পারে।”
সেমিনারে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে সরাসরি ব্যাখ্যা করেন। তাদের মতে, “স্তনের কোষ যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে, তখনই ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। নিয়মিত পরীক্ষা করলে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায় এবং সেই পর্যায়ে চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি সফল।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ। উপস্থিত ছিলেন এ. কে. এম. মহসিন, বখতিয়ার রানা, শাহনাজ পলি ও মাসুমুর রহমান খলিলী। সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান।
