ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:২২:৩৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

কন্যাশিশুর বাবা-মা হওয়ার আনন্দে গ্রামজুড়ে ফলের চারা বিতরণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:১১ এএম, ৯ নভেম্বর ২০২৫ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় নিজের কন্যাসন্তানকে স্বাগত জানিয়ে গ্রামজুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছের চারা উপহার দিয়েছেন এক দম্পতি।

গত শুক্রবার ও শনিবার নিজ গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, বেল, কদবেল, কালো জাম, সফেদা, আপেলকুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির এই গাছের চারা তুলে দেন তারা।

সন্তানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নিয়েছেন চিতলমারী উপজেলার কালশিরা গ্রামের মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও তার স্ত্রী সাথী রানী ব্রহ্ম।

চলতি বছরের ২০ মে এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যাসন্তান। নাম রাখা হয় সম্প্রীতি ব্রহ্ম মৌলী। নবজন্মের আনন্দকে শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজ ও প্রকৃতির সঙ্গে ভাগ করে নিতে এই উদ্যোগ বলে জানান সম্প্রীতির বাবা-মা।

মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, ওর জন্মের পর আমরা (সম্প্রীতির বাবা-মা) নিজেরদের মধ্যে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের মেয়ে যে গ্রামে বড় হবে, সেই গ্রামের আলো-বাতাস যেন নির্মল থাকে—এই ভাবনা থেকেই এমন উদ্যোগ। গাছগুলো যেমন আমাদের সন্তানের সঙ্গে বড় হবে, তেমনি একদিন ফলে ফলে ভরে উঠবে গ্রাম। আমরা চাই, আমাদের মেয়ের জন্ম যেন শুধু আমাদের আনন্দেই সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং প্রকৃতি ও সমাজের জন্যও কিছু রেখে যায়।

সম্প্রীতির মা সাথী রানী ব্রহ্ম বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটু একটু করে টাকা জমিয়েছি। এর সঙ্গে সন্তান জন্মের পর বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের টাকা মিলিয়ে আমরা গাছগুলো কিনেছি।

কালশিরা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা নারদ রায় বলেন, মেয়ের জন্ম উপলক্ষে সে যে গাছ বিতরণ করল, তাতে গ্রামের পরিবেশ যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি শিশু জন্মের আনন্দটাও সমাজের সঙ্গে ভাগ হলো। তার মতো করে সবাই ভাবলে দেশের ভালো হতো।

২০১৩ সালে বছরের ১৫ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে চিতলমারী সদর ইউনিয়নের কালশিরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল ব্রাহ্মণের ছেলে মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণের সঙ্গে রায়গ্রামের অমল ঢালীর মেয়ে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিজেদের বউভাতে খরচ বাঁচিয়ে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সহশ্রাধিক বই বিতরণ করেছিলেন এই দম্পতি। বাড়িতে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বই বিতরণ ও বই পড়ায় উৎসাহিত করেন তারা।

মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম গত পাঁচ বছর ধরে (২০২০ সাল থেকে) স্থানীয় চারটি গ্রাম, কালশিরা, রুইয়াকুল, শ্রীরামপুর ও বেন্নাবাড়ির যে কোনো পরিবারের নবজাতকের জন্ম হলে তাদের বাড়িতে গিয়ে গাছের চারা উপহার দিয়ে আসছেন।