জাহানারার অভিযোগ তদন্তে স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ যুক্ত করার দাবি টিআইবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:৪৯ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০২৫ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাতীয় নারী দলের ক্রিকেটার জাহানারা আলমের আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে গতকাল শনিবার তিন সদস্যের কমিটির নাম ঘোষণা করেছে বিসিবি।
তবে শুধু কমিটি গঠনই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির দাবি, অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে কমিটিতে যৌন হয়রানি তদন্তে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অন্তত দুজন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞকে যুক্ত করতে হবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই। তবে এ কমিটির কার্যক্রমে পরিপূর্ণ পেশাদারত্ব, নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিতের স্বার্থে যৌন হয়রানির মতো বিশেষ ক্ষেত্রে অভিযোগ তদন্তের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন অন্তত দুজন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞকে তদন্ত কমিটিতে যুক্ত করতে হবে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘এর আগেও উত্থাপিত যৌননিপীড়নের অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিসিবি, বরং অভিযোগ ধামাচাপা দিয়ে নিপীড়কের বিচারহীনতাকে প্রশ্রয় দিয়েছে, যা বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট তথা সার্বিক ক্রীড়াঙ্গনে একদিকে যেমন পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করছে, অন্যদিকে নারীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকে পদদলিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, এ প্রশ্ন উত্থাপন করা মোটেও অযৌক্তিক নয়।’
টিআইবির মতে, এই অভিযোগকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। একাধিক নারী ক্রিকেটার একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানিকভাবে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিসিবির মধ্যে কার্যকর কাঠামো না থাকা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পুরুষের তুলনায় উজ্জ্বলতর সাফল্য বয়ে এনেছেন, এ সাফল্য অবমূল্যায়নের এর চেয়ে ধিক্কারজনক দৃষ্টান্ত আর থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
সংস্থাটি বিসিবিকে অনতিবিলম্বে স্বাধীন ও জেন্ডার-সংবেদনশীল অভিযোগ গ্রহণ ও প্রতিকার কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে আইসিসির মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশিক্ষিত কর্মকর্তাসহ কার্যকর সেইফগার্ডিং পলিসি প্রণয়ন ও ভবিষ্যতের সব তদন্তে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে টিআইবি।
এ ছাড়া টিআইবি বিসিবির সুশাসন ও নৈতিকতার ঘাটতি নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে। সংস্থাটির ভাষায়, ম্যাচ ফিক্সিং, আর্থিক অনিয়ম ও প্রশাসনিক দুর্বলতা বিসিবির বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ২০১৬ সালে ক্রিকেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় টিআইবি যে সুপারিশগুলো দিয়েছিল, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।
