শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, চড়–থাপ্পড়ে মীমাংসা
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:১৮ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৫ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার করতে সালিস বৈঠক করেন গ্রামের মাতব্বরেরা। সেখানে তারা ধর্ষণের চেষ্টাকারী যুবককে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় এবং দ্রুত বিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়ে ঘটনার মীমাংসা করে দেন।
গত ৮ নভেম্বর রাতে উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাড়-ঝনঝনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার প্লে শ্রেণির ছাত্রী।
ঘটনা সম্পর্কে শিশুটির বাবার ভাষ্য, তার মেয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী একজন হুজুরের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়। ঘরের লোকজন একটু ব্যস্ত থাকায় ঘটনার দিন রাত ৮টায় মেয়েকে প্রাইভেট শেষে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলেন তারই এক ভাতিজাকে (২২)। কিন্তু পথে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। তখন বিপ্লব মাতুব্বর নামের এক ব্যক্তি টের পেয়ে এগিয়ে এলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান ভাতিজা। পরে মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে দিয়ে যান বিপ্লব। রাতেই বিষয়টি জানাজানি হলে পরের দিন সালিস বৈঠকে বসেন স্থানীয় কয়েকজন মাতুব্বর। তারা ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত তরুণকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারেন ও আগামীতে এমন কাজ না করার জন্য শাসিয়ে দেন। এছাড়া তাকে দ্রুত বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন মাতবররা। আর বিয়ে না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে সালিস শেষ করেন তারা।
শিশুটির বাবার অভিযোগ, এভাবে সালিশ শেষ করার পর বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলেন মাতবররা। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় মুরব্বিদের চাপে এবং মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে এ ঘটনার বিচার চান তিনি।
সালিসে অংশ নেন পাড়-ঝনঝনিয়া গ্রামের মাতুব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি। তারা প্রথমে ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে বলেন, ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। তাই সালিশের মাধ্যমে দোষীকে শাসন করা হয়েছে। আর গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়ে থানায় কেন অভিযোগ করতে বাধা দিয়েছেন এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর দেননি তারা।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। কিন্তু এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার কোনো বিষয় স্থানীয় মাতব্বরেরা এভাবে সালিস দিতে পারেন না।’
