সরবরাহ বাড়লেও সবজির দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত
বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও সেই তুলনায় কমেনি দাম। বরং দু্ই সপ্তাহ আগের চেয়ে বেশির ভাগ সবজির দর কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকার মতো। কোনোটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। তবে আলোচনায় থাকা পেঁয়াজের দর কিছুটা কমেছে। কাঁচামরিচের দর নেমেছে অর্ধেকে। ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক। এদিকে, ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে পারে এমন আলোচনা ব্যবসায়ীদের মুখে মুখে ফিরছে।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ বাড়লেও উৎপাদন এলাকায় সবজির দর চড়া। এর প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও, মহাখালী ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ার কারণে সপ্তাহ দুয়েক আগে বাজার কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছিল ২০ থেকে ৩০ টাকার মতো। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে আবার চড়ছে বাজার। দুই সপ্তাহ আগে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ছিল শিমের কেজি। গতকাল শিম বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো বরবটি ও উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগে অন্তত ১০ টাকা কমে কেনা গেছে সবজি দুটি। একইভাবে ঢ্যাঁড়শ ও পটোলের কেজি ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো মাঝারি আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচামরিচের দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে। গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ কিনতে ক্রেতাকে কেজিতে খরচ করতে হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে।
বাজারে নতুন আলু এসেই নিজের জাত চেনাচ্ছে। প্রতি কেজি আলু হাঁকা হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। পুরোনো আলুর দরও বেড়েছে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকার মতো। বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে।
আগারগাঁও কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী সাইফুল আলম বলেন, কারওয়ান বাজার ও মিরপুর-১ নম্বরে পাইকারি পর্যায়ে সবজির দর বেড়েছে। এ কারণে খুচরায় দাম বাড়তি। তবে কারওয়ান বাজারের আড়তদার ইদ্রিস আলি বলেন, এখন উৎপাদন এলাকায় সবজির দাম বেশি। নতুন সবজির ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। এ জন্য ঢাকায় দাম বাড়ছে। তাঁর ভাষ্য, গত মাসে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পানি জমে কিছু গাছ মরে গেছে। কৃষক তা পুষিয়ে নিচ্ছে।
সবজির বাজার চড়া হলেও ডিম ও মুরগির বাজারে কিছুটা সুবাতাস বইছে। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। যদিও পাড়া-মহল্লায় ১২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মুরগির বাজার গত সপ্তাহের মতো স্থির রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৭০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছ-মাংসের বাজারে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের জানিয়েছেন, সয়াবিন তেল লিটারে ৫ থেকে ৬ টাকা বাড়তে পারে। তবে সরবরাহে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি।
এদিকে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে অস্থির হয়ে উঠে পেঁয়াজের বাজার আরও কমতির দিকে রয়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে আরও ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা দরে। আর পাতাযুক্ত নতুন পেঁয়াজের কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
বাজারে দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় শেষ পর্যন্ত আমদানি করা হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
