শ্রীলঙ্কায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত ৪৪, ডুবছে মালয়েশিয়াও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৯:১০ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৫ শুক্রবার
ছবি: সংগৃহীত
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে চলতি সপ্তাহে শ্রীলঙ্কায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২১ জন। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের (ডিএমসি) বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বন্যা-ভূমিধসে নিহতদের বেশিরভাগই দেশটির মধ্যাঞ্চলের চা-বাগান এলাকা বদুল্লার বাসিন্দা। ওই এলাকায় রাতে পাহাড়ি ঢাল ভেঙে ঘরবাড়ির ওপর ধসে পড়ে। এতে ২১ জন চাপা পড়ে মারা যান বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
এছাড়া দেশটির নুয়ারা এলিয়া জেলাতেও একইভাবে মাটি চাপা পড়ে আরও চারজন নিহত হয়েছেন। বাকিরা অন্যান্য এলাকায় মারা গেছেন।
ডিএমসি বলছে, কাদাধসে ৪২৫টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবারকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কাজুড়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সময় চলছে। কিন্তু দেশটির পূর্ব দিকে অবস্থানরত একটি নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাত আরও তীব্র হয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
মালয়েশিয়ায় বন্যা
বৈরী আবহাওয়ার কারণে মালয়েশিয়ার সরকার দেশের শেষ বর্ষের স্কুল পরীক্ষা দু’দিনের জন্য স্থগিত করেছে। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আইনপ্রণেতারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ কারণে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের বাজেট বিতর্ক স্থগিত করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন এলাকায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় বৃহস্পতিবার ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ হতে পারে।
চলতি সপ্তাহে আবহাওয়া-সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের জুনের পর সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে ডিএমসি। ওই সময় দেশটিতে ভারী বৃষ্টিতে ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। গত ডিসেম্বর বন্যা ও ভূমিধসে ১৭ জন নিহত হন।
দেশটিতে চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় দেশটিতে ২৫৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।
সেচকাজ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য শ্রীলঙ্কা মৌসুমি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশটিতে বন্যা আরও ঘন ঘন দেখা যেতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস বিভাগ জানায়, নিহতদের মধ্যে ৩৭ বছর বয়সী একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীও রয়েছেন।
এ ঘটনায় আরও ৭৬ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১ জন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য। কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও ভবনগুলোতে যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের সন্ধানে উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঘনবসতিপূর্ণ ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসিক কমপ্লেক্সের আটটি ব্লকে ২ হাজার ফ্ল্যাটে ৪ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ বসবাস করেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের পর জরুরি ভিত্তিতে খোলা আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৯০০ বাসিন্দাকে রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে অনেকেই আপনজনকে খুঁজে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
এ ঘটনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং শোক প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি।
