গাজায় ‘বাস্তবে’ নির্যাতনের নীতি নিয়েছে ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২৫ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েলের হামলা বিশ্ববাসীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আইন বা চুক্তিতে হামলা, নির্যাতন বন্ধের কথা বলা হলেও বাস্তবে এসব অপরাধ তারা কার্যকর রেখেছে। এ নিয়ে জাতিসংঘের নির্যাতনবিষয়ক কমিটি বলেছে, ইসরায়েল গাজাবাসীর ওপর নির্যাতনের ডি-ফ্যাক্টো (আইনগতভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও বাস্তবে ঘটছে) নীতি নিয়েছে। এই অপরাধের স্পষ্ট প্রমাণও রয়েছে।
বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের এই কমিটি নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কীভাবে বিভিন্ন দেশে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে তা নিয়মিত রেকর্ড ও পর্যালোচনা করা হয়।
ইসরায়েলের ব্যাপারে পর্যালোচনায় ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মানবাধিকার গোষ্ঠী ইসরায়েলি আটক কেন্দ্রে নির্যাতনের ভয়াবহ বিবরণ তুলে ধরেছে। জাতিসংঘ কমিটিতে অভিযোগ উঠেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে।
জাতিসংঘ কমিটির মতে, প্রশাসনিক আটক কিংবা বেআইনি যোদ্ধা বা সন্দেহভাজনদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে ধরা যায় না। তবে ইসরায়েল আইনজীবীসহ অন্যান্য পেশাজীবীকে ধরে নিয়ে বন্দি করছে। এই আটক মূলত ‘জোরপূর্বক অন্তর্ধান’। কমিটির অভিযোগ, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি শিশু, গর্ভবতী নারী ও বয়স্কদের আটকে বেআইনি যুদ্ধ আইন ব্যবহার করছে। আটকদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
প্রমাণ হিসেবে জাতিসংঘ কমিটি উল্লেখ করেছে, ফিলিস্তিনিদের নিয়মিতভাবে খাবার ও পানি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদের ওপর প্রচণ্ড মারধর করা হচ্ছে। এসব বন্দিদের ওপর কুকুরের আক্রমণ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, পানি সরবরাহ বন্ধ এবং যৌন সহিংসতার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিছু বন্দিকে স্থায়ীভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। অনেককে আবার টয়লেটে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি এবং ডায়াপার পরতে বাধ্য করা হয়েছে।
জাতিসংঘ কমিটি মনে করে, এই ধরনের আচরণ মানবতাবিরোধী অপরাধ। একইভাবে ডি-ফ্যাক্টো নীতিতে গণহত্যাও চালানো হচ্ছে। যদিও ইসরায়েল বারবার গণহত্যা চালানোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
কমিটি দ্ব্যর্থহীনভাবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার নিন্দাও জানিয়েছে। তবে কমিটির শুনানির সময় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মেরন নির্যাতনের অভিযোগগুলোকে ‘ভুল তথ্য’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পশ্চিম তীরে আত্মসমর্পণ করার পরও দুই ফিলিস্তিনিকে হত্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিটি।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরর (ইইউ) সমতাবিষয়ক কমিশনার হাদজা লাহবিবকে গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়েছে ইসরায়েল। লাহবিব বলেন, মিসর সফরের সময় তিনি গাজায় প্রবেশের পরিকল্পনা করেছিলেন।
ইসরায়েলি হামলায় দুই ভাই নিহত
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুহেলা শহরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। তারা দুই ভাই। প্রত্যক্ষদর্শীরা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার সকালে আল-ফারাবি স্কুলের কাছে একদল বেসামরিক নাগরিকের ওপর ড্রোন হামলায় জুমা ও তার ভাই ফাদি তামের আবু আসি নিহত হয়।
ফিলিস্তিনি নেতার মুক্তি দাবি
ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারঘৌতির মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী প্রচারণা শুরু হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের নাগরিক সমাজের সহায়তায় পরিচালিত হবে এই প্রচারণা। লন্ডনে ‘ফ্রি মারওয়ান’ শব্দের দেয়ালচিত্র লন্ডনে দেখা গেছে। গাজার রামাল্লাহর কাছে বিশাল পাবলিক শিল্প স্থাপনাও দেখা গেছে।
