ঢাকা, সোমবার ২০, মে ২০২৪ ৫:১২:৫৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নির্মান শ্রমিক সুফিয়ার যাপিত জীবন : মাসুক হেলাল

মাসুক হেলাল

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০৬:১৯ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১২:৩৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

সুফিয়ার স্কেচ, একেঁছেন মাসুক হেলাল

সুফিয়ার স্কেচ, একেঁছেন মাসুক হেলাল

সুফিয়া বেগম নির্মান শ্রমিক। মাটি ও ইটের বোঝা মাথায় করে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া তার কাজ। আমি সুফিয়াকে নিয়ে ২০১০ সালে, প্রথম আলোতে লিখে ও একেঁছিলাম। লেখাটি আমার বই ‘বাছাই মুখ ও মুখোশে`-এ গেছে।

 

আজ সকালে, বাসায় ছবি আঁকছিলাম। আমাদের বাসার চারপাশে ড্রেনেজের কাজ চলছে। নির্মান শ্রমিকরা কাজ করছে। আমি জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে দেখছিলাম। বাসায় কড়া নাড়ার শব্দে, দরজা খুলে দেখি মাথায় বিড়া প্যাচানো এক মহিলা। `স্যার আমার ছবি আপনি আঁকছিলেন। আমি সুফিয়া। আমি কয়দিন ধইরা আপনারে দেখতাছি। দেখা করতে আসলাম। স্যার, ছিনছেন?`

 

সুফিয়া জানালেন, সকাল ছয়টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে সংসারের কাজকর্ম করেন। রান্নাবান্না সেরে তিন সন্তানকে খাইয়ে নিজের দুপুরের খাবার নিয়ে আসেন। আজ খালি ভাত, আর বাসি ডাল এনেছেন। সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচ পযর্ন্ত কাজ করেন এখানে। সুফিয়া বেগম প্রতিদিন মুজুরি পান ৩৫০ টাকা। তার থেকে ৫০ টাকা সরদাররা নিয়ে নেন। পুরুষরা পান ৫০০ টাকা।

 

সুফিয়া বেগম জানান, তার স্বামী দু`বছর আগে আরেকটা বিয়ে করেছেন। ওই বৌ নিয়ে থাকে কচুক্ষেত এলাকায়। সুফিয়া তিন মেয়ে নিয়ে থাকেন মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে। তাদের ঘর ভাড়া সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। সুফিয়ার ছোট দুই মেয়ে স্কুলে পড়ে। বিকেলে তিন মেয়ে ডিম সিদ্ধ করে বিক্রি করে।

 

সুফিয়ার বড় মেয়ে লাভলীর ১৮ বছর বয়স। তার বিয়ের প্রস্তাব আসে কিন্তু হয় না। সুফিয়া জানান, বড় মেয়ে `বেভল্যা` বুদ্ধিশুদ্ধি কম। পাত্রপক্ষ এক লাক্ষ টাকা পণ চায়। `এদিকে পাড়ার বিহারী এক পোলা, লাভলীর পিছে ঘোরাঘুরি করে।` আমি থাকি কামে, মাইয়াডা থাকে ঘরে। কাজের মধ্যে সারাক্ষণ চিন্তা করি। `সুফিয়ার শরীরে জ্বর। জ্বর নিয়েই কাজ করছেন। তার বক্তব্য, `কাজ না করলে খামু কি?`

৪ অক্টোবর, ২০১৮

মাসুক হেলাল, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী, প্রথম আলোতে কর্মরত