ঢাকা, রবিবার ২১, ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৫৮:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

হাড়ের ব্যথায় পুরুষের চেয়ে নারীরা কেন বেশি ভোগেন

হেলথ ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৩৭ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে নারীর মধ্যে হাঁটুব্যথার প্রবণতা খুব বেশি দেখা যায়। পায়ের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন না এমন ৫০ ঊর্ধ্ব নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কারণ নারীর মধ্যে হাড়ের ক্ষয়ের প্রবণতা বেশি। যার ফলে আর্থ্রাইটিসে এখন আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। নারীর বয়স ৪০ বছরের পর ও পুরুষের ক্ষেত্রে ৭০ বছর বয়সের পর এই ক্ষয় দেখা যায়। পায়ে ব্যথা নিয়ে মাথাব্যথা প্রায় অধিকাংশ নারীরই। হাঁটতে গেলেই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি—এমন অবস্থা তৈরি হয়। বয়সের গণ্ড ৪৫ পেরোলেই ঘরে ঘরে হাঁটুব্যথার সমস্যা। 

এ বিষয়ে অর্থপেডিক ডা. কিরণ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, বয়স ও দৈর্ঘ্যের অনুপাতে শরীরের অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, ব্যায়াম এবং অনেকক্ষণ একই জায়গায় একইভাবে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকা, অতিরিক্ত সিঁড়ি ভাঙা, পর্যাপ্ত পরিশ্রমের অভাব, সব কিছুই অস্টিওআর্থ্রাইটিসের প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টর।

তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে। মেনোপজের পর রক্ষাকবচ হরমোন ইস্ট্রোজেন কমতে শুরু করে। শুরু হয় অন্যান্য অসুবিধার সঙ্গে হাড়ের নানা সমস্যা। এর ফলে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে এবং পেশিও দুর্বল হয়ে পড়ে। তার সঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। হাঁটুর কার্টিলেজ ক্ষয়ে হাঁটুতে ব্যথা শুরু হয়।

এমন পরিস্থিতিতে সাবধান হওয়া উচিত বলেন মনে করেন চিকিৎসক। হাঁটু সোজা রেখে তারপর হাঁটুতে হাত রেখে মুড়লে যদি কড়মড় করে শব্দ অনুভব করেন, তাহলে সাবধান হওয়া জরুরি। একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় প্যাল্পেবল ক্রেপিটাস| এ ছাড়া আরও কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। যেমন- নিচে বসে থাকলে উঠতে অসুবিধা, সিঁড়িতে উঠতে অসুবিধা। যদি সমান রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে সমস্যা হয়, তাহলে বুঝতে হবে অনেকটা অ্যাডভান্স স্টেজে চলে গেছে আর্থ্রাইটিস।

অর্থপেডিক ডা. কিরণ মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, আর্থ্রাইটিস বা হাড়ের ক্ষয় গ্রেড ওয়ান থেকে ফোর পর্যন্ত ভাগ করা হয়। প্রথম দুই পর্যায়ে ওষুধ কিংবা সাধারণ ব্যায়ামের মাধ্যমে ঠিক করা গেলেও, গ্রেড থ্রি-তে চলে গেলে পা বেঁকে যায়। অসহ্য ব্যথায় অচল হয়ে যায় জীবন। এ ক্ষেত্রে যদি কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান, তাহলে হাঁটুর জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টই একমাত্র স্থায়ী ও নিরাপদ সমাধান। তবে আজকাল অনেকে এমন রয়েছেন, এই পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই অপারেশন করিয়ে নেন। এটি আবার ঠিক নয়।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, এর সাবধান—

ছোট থেকেই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরচর্চা প্রয়োজন। নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটুন। অতিরিক্ত ধূমপান ও মদপান ক্ষতি হয়। ফাস্টফুড কিংবা অতিরিক্ত চর্বি সমৃদ্ধ খাবার বর্জন জরুরি। বিশেষ করে যাদের এই রোগ একবার ধরা পড়ে গেছে, তারা নিয়মিত ব্যয়াম করুন। ‘ভালো হয়ে গেছে’ ভেবে ব্যায়াম ছেড়ে দেবেন না। তাহলে আবার সেই আগের পর্যায়ে ফিরে যাবেন।

এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে কিংবা দাঁড়িয়ে কাজ নয়, ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণ করুন। শরীরের নিম্নাংশের ফ্যাট বা পেটের মেদ কমাতে হবে। আর মেনোপজের পর থেকে যেহেতু শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি বেড়ে যায়, তাই আলাদা করে সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। আর খাদ্যাভ্যাসে দই, সবজি ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার রাখবেন।