ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:৫৮:১৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বর্ণবাদের বিষবাষ্প এবার খাজার দুই মেয়ের দিকে

ক্রীড়া ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৮ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে সেই রক্তক্ষয়ী হামলা পুরো অস্ট্রেলিয়াকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের ওপর এমন নৃশংস হামলা দেশটিকে নাড়িয়ে দিয়েছে ভীষণভাবে। কেউ প্রাণ হারিয়েছেন, কেউবা ফিরে এসেছেন আমৃত্যু তাড়া করে বেড়ানো এক ট্রমা নিয়ে। শোকাতুর এই আবহে বিষিয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও। আর সেই বিষের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ওপেনার উসমান খাজা ও তাঁর পরিবার।

‘উজি’র পরিবার যেন এক দুঃস্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছে এখন। খাজার স্ত্রী র‍্যাচেল জানিয়েছেন, তাঁদের ছোট ছোট মেয়েদের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণ্য সব মন্তব্য ধেয়ে আসছে। বন্ডাই সৈকতের সেই কাপুরুষোচিত হামলার পর অস্ট্রেলিয়ায় ‘ইসলামফোবিয়া’ ও ‘অ্যান্টি-ইসলাম’ মনোভাব হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। আর তার বলি হচ্ছেন খাজা ও তাঁর নিষ্পাপ সন্তানেরা।

বন্ডাই সৈকতে সেই ভয়াবহ হামলায় জড়িত হিসেবে সাজিদ আকরাম ও নাভিদ আকরাম নামে দুই বাবা-ছেলের নাম উঠে এসেছে। এর পর থেকেই অস্ট্রেলিয়ায় একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই ঘৃণার আঁচ এসে লেগেছে ক্রিকেট অঙ্গনেও। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে জন্ম নেওয়া উসমান খাজা পাঁচ বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে সিডনিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়াকে ভালোবেসে সেই দেশের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খাজার এই পরিচয়কেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

র‍্যাচেল খাজা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা কিছু আপত্তিকর মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে তাঁদের দুই কন্যাসন্তানকেও টেনে আনা হয়েছে। ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ র‍্যাচেল লিখেছেন, ‘গত এক সপ্তাহে আমাদের দিকে আসা মন্তব্যের ছোট একটি নমুনা এগুলো। বলতে পারতাম যে এমন ঘটনা এবারই প্রথম, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমরা সব সময়ই এমন বার্তার শিকার হই। তবে ইদানীং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’

খাজার জন্য মাঠের বাইরে এমন ‘স্লেজিং’ নতুন কিছু নয়। তবে পরিবারের ওপর এমন আক্রমণ তাঁদের সবার জন্যই মেনে নেওয়া কঠিন। এই কঠিন সময়েও র‍্যাচেল কিন্তু ভেঙে পড়েননি। বরং সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথা, শোকের এই সময়ে বিভাজন নয়, একে অপরের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে জরুরি।

র‍্যাচেল লিখেছেন, ‘এখন আমাদের একসঙ্গে থাকাটা আগের চেয়েও বেশি প্রয়োজন। সেটি ইহুদিবিদ্বেষ, ইসলামফোবিয়া কিংবা বর্ণবাদ—যা–ই হোক না কেন—কোনো কিছুরই আমাদের সমাজে স্থান থাকা উচিত নয়।’

মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য খাজা বরাবরের মতোই অবিচল। অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্ট মিস করার পর তৃতীয় টেস্টে ফিরেই প্রথম ইনিংসে ৮২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন। দলও জিতেছে টানা তিন টেস্ট, জিতে নিয়েছে অ্যাশেজও।

মাঠের লড়াইয়ে খাজা প্রতিপক্ষকে হারাচ্ছেন ঠিকই। প্রশ্ন হচ্ছে, কিন্তু মাঠের বাইরে এই যে অদৃশ্য ‘বডিলাইন’ আক্রমণ, তা থামাবে কে?