ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ৪:৫৬:৪৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সব নতুন তামাক পণ্য নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে ক্যান্সার ও অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমাতে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও কঠোর করছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন পেয়েছে। নতুন অধ্যাদেশে ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট ও নিকোটিন পাউচ ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দোকান, অনলাইন বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রদর্শনও বন্ধ হচ্ছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক প্রস্তাবিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

এটি জারির আগে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ভেটিং নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস জটিলতা ও শ্বাসতন্ত্রের রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই বাস্তবতায় বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ আরও শক্তিশালী করতে সংশোধনী আনা হচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন অধ্যাদেশে উদীয়মান তামাক পণ্য যেমন ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞার আওতায় এবার নিকোটিন পাউচও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ফলে এসব পণ্য আর দেশে বৈধভাবে উৎপাদন, বাজারজাত বা ব্যবহার করা যাবে না।

পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে শুধু ধূমপান নয়, সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিধানও এখন সরকারের নির্দেশনার শর্তাধীন করা হয়েছে। অর্থাৎ সরকার প্রয়োজনে নির্ধারিত ধূমপান অঞ্চল বাতিল বা সীমিত করতে পারবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, অধ্যাদেশে ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দোকানে পণ্যের প্রদর্শন বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রসার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে অনলাইন প্রচার, দোকানের তাক বা ক্যাশ কাউন্টারে তামাক পণ্য দৃশ্যমানভাবে সাজিয়ে রাখাও আইনের আওতায় নিষিদ্ধ হবে।

এছাড়াও তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটের গায়ে বিদ্যমান ৫০ শতাংশ এলাকার পরিবর্তে ৭৫ শতাংশ এলাকাজুড়ে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা মুদ্রণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে প্যাকেটের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে থাকবে তামাকের ক্ষতি সংক্রান্ত স্পষ্ট সতর্কবার্তা।

অধ্যাদেশ অনুমোদনের দিনেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পুরাতন সম্মেলন কক্ষে প্রবীণ স্বাস্থ্য: চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় তিনি বলেন, প্রবীণদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য ও ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। তামাক নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কঠোর সিদ্ধান্তও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, নতুন অধ্যাদেশ কার্যকর হলে তরুণ, মধ্যবয়সী ও প্রবীণ- সব বয়সী জনগোষ্ঠী দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বড় সুরক্ষা পাবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ শুধু আইনি কড়াকড়ি নয়, সচেতনতা, সামাজিক অংশগ্রহণ ও প্রয়োগ- সব মিলিয়ে কাজ করতে হবে। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেজিসলেটিভ বিভাগের ভেটিং শেষ হলেই অধ্যাদেশটি জারি করা হবে। এরপর অনুমোদিত নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হবে।