ঢাকা, শুক্রবার ০৩, মে ২০২৪ ৮:৩৬:৫৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

শিল্পাঞ্চলে জন্ম নেয়া শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ১০:৪৮ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

শিল্প এলাকা, বিশেষ করে কল-কারখানাবহুল এলাকায় জন্ম নেয়া শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। এসব শিশুদের হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি এসব শিশুরা অকালে মারাও যেতে পারে। এছাড়াও এসব শিশুরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যাসহ এডিএইচডি, পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া, অপুষ্টি এবং শারীরিক দূর্বলতায় ভুগতে পারে।

 


এক গবেষণায় দেখা গেছে, কল-কারখানা-প্রধান এলাকার ০.৮ কিলোমিটারের মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদের কম ওজন নিয়ে জন্ম নেবার আশঙ্কা অন্য এলাকায় শিশুদের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি।

 


ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রেজিটার্ড ডা. সাইদুর ইসলাম সোহাগ বলেন, এসব শিল্প প্রধান এলাকায় বসবাসরত গর্ভবতী মায়েদের ওপরও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যার ফলে তাদের জন্ম নেয়া শিশুরাও এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারে না।

 


তিনি বলেন, এসব এলাকার শিশুরা মূলত হাঁপানি রোগেই বেশি আক্রান্ত হয়। কিন্তু অনেক বাবা-মা’ই তাদের সন্তানদের এই নিরব ঘাতক সম্পর্কে শুরুতে কিছুই জানতে পারেন না। অধিকাংশ সময় একেবারে শেষ সময়ে তারা তাদের বাচ্চাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন আসলে হাজার চেষ্টা করেও বাচ্চাকে বাঁচানো যায় না।

 


তিনি বলেন, এজন্য দরকার আমাদের সচেতনতা এবং সঠিক পরিকল্পনা। কল-কারখানা প্রধান এলাকায় আবাসিক বাসা-বাড়ি গড়ে তোলা কোনভাবেই উচিত নয়। এছাড়াও বাংলাদেশের অধিকাংশ কল-কারখানা এখনো কোন ধরনের নিয়ম মানে না। তাদের নিজস্ব কোন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নেই। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ ওইসব এলাকার সাধারন মানুষ বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

 


মানবাধিকার কর্মী তাসলিমা সুলতানা বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা সব ধরনের কাজের জন্য সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকি। আমাদের অনেকের ধারণা যে সব কিছুই সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে বাংলাদেশ আয়তনের দিক থেকে ছোট একটি দেশ হলেও এর জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। আর তাই আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে।

 


তিনি বলেন, সরকার কল-কারখানা মালিকদের তাদের কারখানা স্থাপনের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা করে দিলেও তারা তা না মেনে যত্রতত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। এছাড়াও এসব কল-কারখানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ অন্য যেসব পরিবেশবান্ধব নীতিমালা রয়েছে তার কোন তোয়াক্কাই করে না। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের শিশুদের উপর। তাদের পাশাপাশি বড়রাও কিন্তু শারিরীকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না।

 


তিনি বলেন, এ জন্য দরকার আমাদের সচেতনতা। এছাড়াও তিনি শিল্প-প্রধান এলাকায় বাসা-বাড়ি স্থাপন এবং আবাসিক এলাকায় কল-কারখানা স্থাপনের অনুমোদন না দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

 


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটা বিষয় স্পষ্ট, একটা দেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শিল্পায়ন এবং জাতির ভবিষ্যত নি:রোগ শিশু উভয়ই দরকার। তবে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে দু’টি বিষয়কেই সুন্দরভাবে এগিয়ে নেয়া যায়। ঘনবসতি এলাকায় কল-কারখানা প্রতিষ্ঠা না করা, যে নীতিমালা রয়েছে তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে শিশু স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।