ঢাকা, শুক্রবার ২৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:০৩:০৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মি টু’র সমর্থনে রাজধানীতে যৌন নিপীড়ণবিরোধী মানববন্ধন

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:১৯ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

# মি-টু’র মাধ্যমে ফেসবুকে নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়ণের ঘটনা প্রকাশকারীদের পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহবান জানিয়েছেন দেশের গণমাধ্যমকর্মী ও # মি-টু আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশকারীরা।

 

#মি টু সলিডারিটি ব্যানারে আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক যৌন নিপীড়ণ বিরোধী মানববন্ধনে একই সাথে যৌন নিপীড়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহবান জানানো হয়।


‘যৌন নিপীড়নকে না বলুন, নিপীড়কদের বয়কট করুন’স্লোগানে এ মানববন্ধন হয়। বক্তারা বলেন, যৌন নিপীড়কের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য #মি টু আন্দোলন। কোনো পুরুষের বিরুদ্ধে নয়। ঘরে-বাইরে শিশু ও নারীর নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র তৈরির জন্য #মি টু আন্দোলনে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।


মানববন্ধন থেকে সরকারের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায় অনুসারে যৌন নিপীড়ণ বিরোধী কমিটি গঠন করার জন্য সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানান নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। তিনি বলেন, এই আইন বাস্তবায়িত হলে যৌন হয়রানি অনেকটাই কমে আসবে।


# মি-টু’তে প্রকাশিত অভিযোগ আমলে নেয়ায় ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রতি সাধুবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ উইমেন জানালিষ্ট ফোরামের সভাপতি মমতাজ বিলকিস বানু বলেন, আমরা আশা করি ডেইলি স্টার অন্য প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। 


উইমেন জানালিষ্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর নাহার মন্টি বলেন, সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে # মি-টু তে নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় যৌন হয়রানির ঘটনা প্রকাশকারীদের সাহসকে আমরা শ্রদ্ধা ও পূর্ণ সমর্থণ জানাই। সেইসাথে তাদের নৈতিকভাবে সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধনে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। পাশাপাশি আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উপরও আস্থা রাখছি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোন নিপীড়ণের বিরুদ্ধেই আমাদের অবস্থান।


বাংলাদেশ উইমেন জানালিষ্ট ফোরামের সাধারন সম্পাদক শারমিন রিনভী বলেন, এমন অনৈতিক আচরণের বহি:প্রকাশে দেশের স্বনামখ্যাতদের মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে। অভিযুক্তদের আসল চেহারা স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আমরা বিব্রতবোধ করছি। বিষয়টি এখন কমিউনিটির গন্ডি পেরিয়ে পারিবারিক অঙ্গনেও প্রবেশ করায় যার পরনাই বিব্রত, চিন্তিত আমরা।


মানবন্ধনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা সোমা বলেন, যৌন নিপীড়ন বন্ধে পরিবার থেকে সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। এজন্য সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।


গণমাধ্যম কর্মী রোকসানা ইয়াছমিন তিথি বলেন, অভিযুক্তদের এমন ঘৃণ্য আচরণে আমরা বিস্মিত। সেই সাথে তাদের এ ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোর সদস্য হিসেবে সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা এবং অভিযুক্তরাও আমন্ত্রিত থাকেন। সেসব অনুষ্ঠানে বেশিরভাগ সময় আমি বা আমাদের পরিবারের সদস্য অংশ নেন। এতে শঙ্কিত বোধ করছি।


সাংবাদিক উদিসা ইসলাম বলেন, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, এই আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে, যদিও শিশু ও নারী যৌন নিপীড়ন নতুন কোন সমস্যা নয়। যুগের পর যুগ এই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই বেড়ে ওঠেন নারী ও শিশুরা। কিন্তু একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আমরা জেনে শুনে আমাদের সন্তানদের যৌন নিপীড়নকারীর সংসর্গে রাখতে পারি না। এই ঘৃন্য অপরাধের জন্য সকল অভিযুক্তের প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন তিনি।


বক্তারা অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, সকল গণমাধ্যমে বয়কট এবং সামাজিক সংগঠনগুলো থেকে তার সদস্য পদ বাতিলের দাবি জানান।


মানববন্ধনে # মি-ট ‘তে অভিযোগকারীদের মধ্যে মুশফিকা লাইজু, নাদিরা দিলরুবা বক্তব্য রাখেন। আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, ঢাকা রির্পোটাস ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ, ঢাকা রির্পোটাস ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, দেশ ইনফো’র নির্বাহী সম্পাদক সাজেদা হক, সাংবাদিক নাজনীন মুন্নী, ফাহমিদা আক্তার, রোজী ফেরদৌসী, শাহনাজ শারমীন, রিতা নাহার, কবীর আহমেদ খান, সাইদা জহুরা শাম্মি, জান্নাতুল পান্না, সেবিকা দেবনাথ, বিবার্তা সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি, প্রজন্ম একাত্তর এর আহবায়ক এফ এম শাহিন, রিফাত ফাতিমাসহ আরো অনেকে।