ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাহাড়সম!
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:০৪ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কথা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় বিক্ষোভের মধ্যে আজ মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী স্কুলে গেলে অভিভাবকরা অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের সামনেই এসব অভিযোগের কথা জানান।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসা থেকে ভিকারুননিসা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর (১৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
অরিত্রির পরিবারের দাবি, অরিত্রির বিরুদ্ধে ফাইনাল পরীক্ষায় নকলের অভিযোগ তুলে তার বাবাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে তার বাবাকে জানানো হয় তার মেয়েকে টিসি দেওয়া হবে। অরিত্রি প্রিন্সিপালের পা ধরে ক্ষমা চাইলেও এ সময় প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল অরিত্রির সামনে তার বাবাকে অপমান করেন। এ ঘটনায় সে রাগে-অভিমানে আত্মহত্যা করে।
আজ শিক্ষামন্ত্রীকে এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে আমরা কয়েকজন গার্ডিয়ান একটা লিখিত অভিযোগ চেয়ারম্যান বরাবর লিখেছি। লেখার পর এই চিঠিটা কে পৌঁছাবে সাহস পায়নি। আমি আরেকজন, আমরা পৌঁছাইছি প্রিন্সিপালকে ছাড়া। প্রিন্সিপাল সাহেব কাউকে চিঠিটা দেনই নাই। প্রত্যেকের বাই নেম সিলগালা করেন উনি এবং ওনার মনপূত গর্ভনিং বডির সদস্য এইটা করেছে। একটা অভিযোগ, আপনার নামে ব্যক্তিগত চিঠি, আপনার নামে দিছি, আপনে পান নাই। মূল সমস্যা প্রিন্সিপাল।’
আরেকজন অভিভাবক বলেন, ‘যে বাচ্চাটি সুইসাইড করল, ওই বাচ্চাটিকে তার নেগেটিভ-পজেটিভ দিকগুলো ঘরের ভিতর ডেকে বুঝিয়ে বলা যেত না? তার তো রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে।’
একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমি ছোট্ট একটা ঘটনা বলি, এই স্কুলে আমার মেয়ে ক্লাস ফাইভে পড়ে। তার পিএসসি (পিইসি) পরীক্ষা ১৮ তারিখ শুরু হবে। ১৪ তারিখে আমার মেয়েকে একজন শিক্ষক অন্যায়ভাবে বলেন, “তোমাকে আমি দেখে নেব, তোমার জীবন আমি শেষ করে দেব।”
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, আমার মেয়ের বাসায় ফিরে নার্ভাস ব্রেক ডাউন হয়েছে। আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। অনেক কষ্ট করে তাকে আমি পরীক্ষা দেওয়ানোর চেষ্টা করেছি। পরীক্ষা সে দিয়েছে। গতকাল সারা রাত আমার মেয়ে ঘুমায় নাই। আজকে সকালে সে ডিক্লারেশন দিয়েছে, তুমি যদি আমাকে ওই স্কুলে পাঠাও আমি সুইনাইড করব।’
শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে ওই অভিভাবক আরও বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়, আমি যখন আমার বাচ্চাকে ভর্তি করেছি, আমাকে যদি জানানো হতো ৮৩টা বাচ্চা একটা ক্লাসরুমে থাককে। আমি আমার বাচ্চাকে ভিকারুননিসায় ভর্তি করতাম না। এটা তো ভর্তি বাণিজ্য। এই ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ হতেই হবে।’
অভিযোগের কথা বলতে গিয়ে একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমরা অভিভাবকরা জিম্মি, স্যার আমরা টোটালি অভিভাকবরা জিম্মি। এখানে বাণিজ্য চলছে, এই বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।’
প্রিন্সিপালের উদ্দেশে আরেকজন অভিভাবক বলেন, ‘বাচ্চার আইডি কার্ডে ভুল আছে, আমরা দেখা করতে চাই, উনি দেখা করবেন না।’
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে সামনে পেয়ে একজন বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা কেন স্কুল বিমুখ হয়, এটার দায়ভার কি শুধুই অভিভাবকদের?’
স্কুলের নিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে একজন অভিভাবক বলেন, ‘অঙ্ক পরীক্ষায় যে আট পেয়েছে, তিন নম্বর ব্যক্তির কারণে তাকে নেওয়া হইছে।’
এ ছাড়া অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন, এই স্কুলে সব সময় অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ করা হয় ছাত্রীদের।
