ধনী-গরিবের অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে: অক্সফাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
ছবি: ইন্টারনেট
বিশ্বের ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আর নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থ্যা অক্সফাম। সোমবার বার্ষিক প্রতিবেদনে তারা এই দাবি করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি মানুষের এই বিশ্বে, সবচেয়ে গরীব অর্ধেকের মোট সম্পদের সমান সম্পদ রয়েছে মাত্র ২৬ জন ধনী ব্যক্তির কাছে।
২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার বছরের পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিলিওনিয়ররা তাদের সম্পদের অঙ্কটা দ্বিগুণ করে ফেলেছেন। এই ধনীদের সমন্বিত সম্পদ বৃদ্ধির দিকে তাকালে চোখ কপালে উঠে যাবার পালা, এই শ্রেণির মানুষদের সমন্বিতভাবে দিনে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে সম্পদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যে পরিমাণটা টাকার অঙ্কে চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিবে, ডলারের বিপরীতে আজকের বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা! কিন্ত বিশ্বের সম্পদের দিক থেকে একদম নিচের কাতারের ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদ সমন্বিতভাবে ১১ শতাংশ করে হ্রাস পেয়েছে। সুইশ শহর ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রকাশিত তথ্য থেকে এসব আবিষ্কার করা হয়।
অক্সফামের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উইনি বাই্যানিমা এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের অর্থনীতি চরম দারিদ্র্যের নিচে বসবাসকারী কয়েকশ মিলিয়ন মানুষের সঙ্গে ভেঙে পড়েছে যখন বিশাল পরিমাণের পুরস্কার যাচ্ছে সম্পদ তালিকার শিখরে থাকা গুটিকয়েকের পকেটে।
তিনি আরও বলেন, `কর্পোরেশন ও ধনী ব্যক্তিদের ওপর যৌক্তিক কর আরোপের মাধ্যম সরকারগণ এই বৈষম্যে একটা প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে। দরিদ্রতা থেকে এসব মানুষকে বের করতে এই করের অর্থ দিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।` প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সম্পদের ক্রমবর্ধমান এই বৈষম্যের কারণে সবচেয়ে বেশি আঘাত হানতে পারে নারী ও শিশুদের ওপর। কারণ সামগ্রিকভাবে বিশ্বব্যাপী সম্পদের ৫০ শতাংশের বেশি মালিক পুরুষ যারা ৮৬ শতাংশ কর্পোরেশনকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
সম্পদ বৈষম্যের কারণে বহু দেশেই আগ্রাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে ধনী ব্যক্তিদের ওপর বাড়তি কর আদায়ে বহুবার আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে তরুণ কংগ্রেস সদস্য আলেক্সান্দিয়া ওকাসিও কর্তেজ আলট্রা-ধনীদের ওপর ৭০ শতাংশের বেশি কর আরোপের প্রস্তাব দিয়ে শিরোনামে পরিণত হয়েছেন। অক্সফাম জানায়, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ মানুষ যদি তাদের সম্পদের ওপর আর মাত্র ০ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি কর দেয় তাহলে সেই অর্থ সংগ্রহ করে বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্কুল-বিমুখ আরও ২৬২ মিলিয়ন শিশুর জন্য শিক্ষা এবং ৩৩ লাখ মানুষের জন্য জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারত।
-জেডসি