ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ২২:৪৫:৫৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সংরক্ষিত নারী আসন নয়, সরাসারি নির্বাচনের দাবি মহিলা পরিষদের

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:০৫ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ রবিবার

ছবি : সংগ্রহ করা

ছবি : সংগ্রহ করা

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করা ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করার দাবিতে এবং অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বাংলদেশ মহিলা পরিষদ।

শনিবার  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ। 

মানববন্ধনে সভাপতি আয়শা খানম বলেন, জাতীয় সংসদে দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব পোষা তোতা পাখির মতো, দলের শেখানো বুলির বাইরে বৃহত্তর নারীসমাজের পক্ষে কোনো কথাই তারা বলতে পারেন না। 

তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজের যথার্থ প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা অত্যন্ত জরুরী। যারা দেশের আপামর সাধারণ নারীর সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলবেন। জাতীয় উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ ও মাত্রা বৃদ্ধিতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন। 

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৩৩ শতাংশে উন্নীত করা এবং সরাসবি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেয় হয়েছিল। ২০০৯ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে এবং সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-তে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার এসব প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের ব্যবস্থা আরও ২৫ বছর রাখার বিধান করা হয়েছে যা নারীসমাজের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক। 

আয়শা খানম জাতীয় সংসদে নারীর যথার্থ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা কিভাবে করা যায় তার একটি বাস্তবসম্মত রূপরেখা প্রণয়নের জন্য দেশের নারীসমাজের পক্ষ থেকে আগামী সংসদ অধিবেশনে একটি বিল উত্থাপনের দাবি জানান। পাশাপাশি দেশব্যাপী অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতন ও নারীর প্রতি চলমান সহিংসতার বিষয়টিকে সামাজিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।  

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর জাতীয় সংসদে কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বর্তমান সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে হবে। মনোনয়ন প্রথা বাতিল করে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই এ বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করতে হবে।   

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ বলেন, বাংলাদেশের সমাজউন্নয়নে নারীরা পারিবারিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, পেশাগত বহুমুখী দায়িত্ব পালনসহ রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নারী ও কন্যার প্রতি অব্যাহত সন্ত্রাস ও নির্যাতন পরস্পর বিরোধী। 

তিনি বলেন, নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে। যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন নিপীড়ন বন্ধে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায় বাস্তবায়ন ও রায়ের আলোকে আইন প্রণয়ন করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।