ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৩:৫২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

‘পত্রিকার একজন সম্পাদককে হত্যা পরিকল্পনা ছিল চার জঙ্গির’

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:০৭ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের চার সদস্য দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদককে হত্যার পরিকল্পনা করছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এছাড়া তাদের এক নেতাকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে কারাগারে হামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল সংগঠনটি।

র‌্যাব সদরদপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১ এর একটি দল। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা যায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও বিরূপ মন্তব্য পোষণকারীদের চিহ্নিত করে ‘টার্গেট অ্যান্ড কিলিং’ এর মিশন সফল করার চেষ্টা করে আসছিলেন তারা।

গ্রেফতার চারজন হলেন- মো. শাহরিয়ার নাফিস ওরফে আম্মার হোসেন (২০), রাসেল ওরফে সাজেদুল ইসলাম গিফারী (২৪), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে নুরুল ইসলাম (২৪) ও মো. আব্দুল মালেক (৩১)।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক লেখায় বিয়ে সংক্রান্ত হাদিস নিয়ে মন্তব্যের জন্য ওই পত্রিকার সম্পাদককে হত্যার পরিকল্পনা করে আনসারুল্লাহর ওই চার সদস্য। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তাদের আটক করা সম্ভব হয়েছে।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর আশুলিয়া এলাকা থেকে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য আব্দুস ছোবহান ওরফে হাবিবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এই চারজনকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি জানান, গ্রেফতার শাহরিয়ার নাফিস ওরফে আম্মার ২০১৭ সালে অনলাইনে (ফেসবুক) আমানের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে এবিটিতে যোগদান করেন। আমান তার নিয়ন্ত্রক। আমানের নির্দেশনায় তিনি ৪-৫টি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে প্রচার-প্রচারণা চালাতেন ও জঙ্গি সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন। শাহরিয়ার এবিটির টার্গেট কিলিং মিশনের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর নজরদারি করা শুরু করেন।

তিনি বলেন, শাহরিয়ার ছদ্মবেশে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাস্তিক গ্রুপ নামে একটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপে ঢুকে পড়েন। সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের এক সদস্যকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ মিশনে শাহরিয়ার ও অপর দুই সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ উদ্দেশে গত সপ্তাহে ঢাকা থেকে একজন ধারালো অস্ত্রসহ এবং অপর সদস্য বরগুনা থেকে বগুড়া গমন করেন। বগুড়া গমনের পর তারা অনলাইনে ফোন করে ওই অ্যাক্টিভিস্ট সদস্যকে সাক্ষাত করতে বলেন। কিন্তু ওই অ্যাক্টিভিস্ট সাক্ষাত না করায় তাদের মিশন ব্যর্থ হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক বলেন, রাসেল ওরফে সাজেদুল ইসলাম গিফারী ২০১৭ সালের মাঝামাঝি ফেসবুকে অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপে নজরদারির নিয়ন্ত্রক আমানের মাধ্যমে এবিটিতে যোগদানে উদ্বুদ্ধ হন। ছদ্মনামে একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মে নির্মাণ শ্রমিক রাসেল আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের এ অংশের সমন্বয়ক। তিনি নিয়ন্ত্রকের নির্দেশনায় বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ, তাদের কাছে অর্থ সংগ্রহ ছাড়াও সদস্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। অপরদিকে রবিউল ইসলাম ২০১৮ সালে শাহরিয়ারের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেন। তিনি ২০১৮ সালে রাসেলের মাধ্যমে বর্ণিত গ্রুপে যোগদান করেন।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, গোপনে তারা সংগঠনকে উজ্জীবিত করার কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের অন্যতম পরিকল্পনা হচ্ছে সংগঠনের প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানীকে কারাগার থেকে মুক্ত করা। যদি তারা তাদের নেতাকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্ত না করতে পারেন, তাহলে কারাগারে হামলা করে হলেও জসিমউদ্দিন রহমানীকে মুক্ত করবেন।

-জেডসি