ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ১৯:৩৭:৪৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বিলুপ্তির পথে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সারা বিশ্বেরই আজ হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষা। প্রভাবশালী ভাষাগুলোর আগ্রাসনে বিপন্ন অসংখ্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা। এর মধ্যে বেশকিছু ভাষা চিরতরে বিলুপ্তও হয়ে গেছে। আর কিছু টিকে আছে সংকটাপন্ন অবস্থায়। তাই বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষাকে রক্ষা করতে ইউনেস্কোর আবেদন থাকলেও বাংলাদেশে প্রায় ১০টির মতো ভাষা এখন বিলুপ্তির পথে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৪১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা রয়েছে। কিন্তু এ ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ না থাকায় সংশ্লিষ্ট নৃগোষ্ঠীর মানুষরা তা চর্চা থেকে প্রায় বিরত আছেন। তাদের সন্তানরাও প্রচলিত বাংলায় শিক্ষাসহ নানা মাধ্যম চর্চা করছেন। ফলে নীরবেই বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে এ ভাষাগুলো। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে বাংলাসহ মোট ভাষা রয়েছে ৪১টি। যার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভাষা আছে ৩৩টি।

এর ভেতরে ১৪টি ভাষাকে বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ভাষা গবেষকরা। একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে রাজবংশী, রাই, বাগদি, কোচ, হদি, কুঁড়ুখ, আদি মালতো ও ভালুর মতো আরও কয়েকটি ভাষা। বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে খাসিয়া, সাঁওতাল, মুণ্ডা, মান্দি (গারো), ককবরক, লালেং (পাত্র), পালিয়া, মৈথেয়ী ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী, খুমি, বম, খেয়াং, পাংখো, লুসাই, ম্রো, চাক, ঠার বা থেক, মারমা, চাকমা, সাদরি ও হাজং।

এ ছাড়া সিং, কর্মকার, বেদিয়া, বর্মণ ও লোহার ভাষা চার্চার অবস্থাও মোটেও ভালো নয়। শুধু বান্দরবানের বেশির ভাগ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরই পাঠ নিতে হচ্ছে বাংলায়। ফলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ রয়েছে এমন অন্যান্য অঞ্চলের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। জানা গেছে, রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে সাঁওতাল ও মহল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের শিশুরা ক্রমেই তাদের মাতৃভাষা থেকে সরে আসছে। এ দুই ভাষায় কোনো বিদ্যালয় না থাকার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে তা ব্যবহার না হওয়ায় চর্চাও কমে গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ১০টির মতো ভাষা বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এর হাত থেকে রক্ষা করতে তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চাকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি ভাষা নিয়ে গবেষণা ও বিলুপ্তির দিকে যাওয়া ভাষাগুলোকে রক্ষা করতে দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষাগুলো টিকিয়ে রাখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।