ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যের আশ্বাস ঢাবি উপাচার্যের
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৬:২৮ পিএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার
ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
সোমবার সকাল ১১টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার পর ডাকসু নির্বাচন দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন উপাচার্য। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে ‘২০১৯ সালের মার্চেই’ ডাকসু নির্বাচন হবে বলে সিদ্ধান্তের কথা জানান। অবশেষে ২৮ বছর পর এ মাসে অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানালেন ভিসি।
উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি বলেন, অনেক শঙ্কা, সন্দেহ ও বিতর্কের পথপরিক্রমায় প্রায় তিন দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কোনো সন্দেহ নেই, এ দীর্ঘ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় তথা জাতি যত সংখ্যক অধিকতর দক্ষ ও নেতৃত্বের গুণাবলি সমৃদ্ধ ব্যক্তিত্ব পেতে পারত তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ বঞ্চনার সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হতে সক্ষম হব। ডাকসু নির্বাচন যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘ক্যালেন্ডার ইভেন্ট’-এ পরিণত হয় সেজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকল মহলের আন্তরিক সদিচ্ছা ও সদয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন একেবারেই ক্রুটিমুক্ত নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. মো, আখতারুজ্জামান বলেন, অনিচ্ছাকৃত বিভিন্ন ভুল-ক্রুটি হয়তো রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে হতে যাওয়া নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও নিখাদ হওয়ার পথ তৈরি হল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ভিসি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিজের ও অপরের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে সমগ্র জাতির জন্য অতীতের মতো ঢাবি শিক্ষার্থীরা মহান আদর্শের সৃষ্টি করবে, এ বিশ্বাস আমি রাখি। মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের স্বাভাবিক পরিণতি জয়-পরাজয়কে ধৈর্য ও শ্রদ্ধাশীল চিত্তে মেনে নেওয়া এক উদার মানবিক মূল্যবোধ। ঢাবি শিক্ষার্থীদের কোনো ঘাটতি আছে বলে কেউ যাতে মনে করতে না পারে, সে বিষয়ে সবার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রক্টরিয়াল টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে ভিসি বলেন, ক্যাম্পাসে বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল পরিবেশ যাতে কোনোক্রমেই বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ করে প্রক্টরিয়াল টিম সতর্ক থাকবে। নির্বাচনের দিন এবং এর আগে ও পরে প্রক্টরিয়াল টিমকে বিশেষ সহায়তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। ভিন্ন মতাদর্শ একটি সমাজের সৌন্দর্য উল্লেখ করে আখতারুজ্জামান বলেন, ভিন্ন মতাদর্শ টিকে থাকতে পারে একমাত্র উদারনৈতিক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক সমাজে। এরূপ সমাজে উগ্রতা, কট্টরবাদিতা, পরাজিত হয়; আর মানবিক ও উদার মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। ঢাবির এ সুমহান ঐতিহ্য সমুন্নত থাকবে, এই আমাদের আহ্বান।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান ও রিটার্নিং অফিসারগণ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, সকল হলের প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক ও সহকারী আবাসিক শিক্ষক এবং ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
-জেডসি
