তিতাসের ২২ খাতে দুর্নীতি পেল দুদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:১৯ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার
ছবি: সংগৃহীত
গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ২২টি খাতে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুপুরে এই সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সচিবালয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক।
দুদক কমিশনার বলেন, কমিশন ২০১৭ সাল থেকে দুর্নীতির জনশ্রুতি আছে এমন ২৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন-বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ বা অপচয়ের দিকসমূহ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা প্রদানে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানিসহ দুর্নীতির কারণসমূহ চিহ্নিত করার মাধ্যমে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে। এরপর প্রতিবেদন দাখিল করতে ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করে। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি টিম যে প্রতিবেদন করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সব টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে। তিতাস গ্যাস সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম তাদের অনুসন্ধানের সময় তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা এবং এতদ্বিষয়ে যারা সম্যক ধারণা রাখে তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহপূর্বক তা পর্যালোচনা করেছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক টিম তাদের অনুসন্ধানের সময় তিতাসের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন দৈনিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া তথ্যসহ ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতাদের বক্তব্য ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা ও অডিট প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে। সার্বিক পর্যালোচনার ভিত্তিতেই প্রাতিষ্ঠানিক টিম তিতাসের দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে করার জন্য প্রণীত সুপারিশমালা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে দাখিল করেছে।
তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনে ২২টি সম্ভাব্য দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়। এগুলো হচ্ছে-অবৈধ সংযোগ, নতুন সংযোগে অনীহা প্রকাশ এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা, অবৈধ লাইনে পুনঃসংযোগ, অবৈধ সংযোগ বন্ধে কোনও আইনগত পদক্ষেপ না নেয়া, অদৃশ্য হস্তক্ষেপ। গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ না করা, বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ দেয়া, মিটার টেম্পারিং, অনুমোদনের মাধ্যমে অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ, মিটার বাইপাস করার মাধ্যমে সংযোগ প্রদান সংক্রান্ত দুর্নীতি, এস্টিমেশন অপেক্ষা গ্যাস কম সরবরাহ করার মাধ্যমে সিস্টেম লস দেখানো, ইচ্ছাকৃতভাবে ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেক্টর না বসানো ইত্যাদি।
এসব দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিশনের প্রতিবেদনে ১২ দফা সুপারিশ প্রদান করা হয়।
ড. মোজাম্মেল হক বলেন, কমিশনের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সহজ হবে। এভাবে দুর্নীতি হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা গেলে মামলা-মোকদ্দমার করার প্রয়োজন পড়বে না।
তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহিষ্ণুতার যে ঘোষণা দিয়েছে কমিশন সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই সব প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়েছে।
-জেডসি