আজও ঘরমুখো মানুষ রাজধানী ছাড়ছেন
শারমিন পারভীন
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৯:৩৭ পিএম, ২ জুন ২০১৯ রবিবার
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আজও রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো অনেক মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে আজ রোববারও অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এমন কি ঈদের দিনও অনেকে বাড়ি যাবেন। গত সপ্তাহ থেকেই মানুষজন নাড়ির টানে বাড়ির পথে ছুটছেন। উদ্দেশ্য আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করা।
এবার ঈদের ছুটিতে সড়কপথে বাড়ি ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে সড়কপথে অন্যান্য বছরের মতো যানজট নেই। কোন ধরনের ভোগান্তি ও সমস্যা ছাড়াই স্বস্তিতে মানুষ বাড়ি যেতে পারছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই মানুষ গ্রামের বাড়ির পথে রওয়ানা দিয়েছেন। এখনও অনেকে রাজধানী ছাড়ছে। রাস্তায় ভোগান্তি কম থাকায় এবার বেশি সংখ্যক মানুষ রাজধানী ছাড়ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে আজও যাত্রীচাপ লক্ষ্য করা গেছে।
প্রতি বছরই ঈদে ঘরমুখো মানুষের সড়কপথে বাড়ি ফেরার সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় ছিল মহাসড়কে যানজট। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু এবং ঢাকা-বগুড়া ও ময়মনসিংহ সড়কের গাজীপুর, কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা এলাকার যানজটের বিড়ম্বনা ঈদ আনন্দকেই মাটি করে দিত।
এবার কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী এবং কোনাবাড়ী উড়াল সড়ক খুলে দেয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। মহাসড়কে আগের মতো আর যানজট নেই।
সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতুর উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে কোনাবাড়ী উড়াল সড়কটিও উদ্বোধন করেন। এরপর এগুলো যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। গত মার্চে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সোনারগাঁর কাঁচপুর এবং মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকা ছিল যানজটপ্রবণ। প্রতি বছর ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের জন্য এই তিনটি স্থান ছিল আতঙ্কের নাম।
শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতীতে তিনটি নতুন সেতু নির্মাণের পর দুই ঘণ্টায় নেমেছে ঢাকা-কুমিল্লার দূরত্ব। চট্টগ্রাম যেতে লাগছে ৫ ঘণ্টা।
একই অবস্থা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কেও। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের উত্তরবঙ্গের ১ শ’ ১৮টি রোডের হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায় বহু গুণ। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের একমাত্র এই মহাসড়ক পথে যানজট ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। যানজটে আটকে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে থাকতে হতো।
কোনাবাড়ী উড়াল সড়ক খুলে দেয়া এবং জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়ক খুলে দেয়ায় এখন বগুড়া যেতে সময় লাগছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। এছাড়া ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-যশোর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও যানজট নেই। নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। আগের চেয়ে কম সময়ে পৌঁছাচ্ছেন যাত্রীরা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক যানজটমুক্ত থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। রাজধানী ঢাকার সাথে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এই মহাসড়কটি।
এবার প্রায় ৯ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়ছে দেশ। তবে এর মাঝে আগামীকাল ৩ জুন সোমবার অফিস-আদালত খোলা। ঈদযাত্রা লম্বা করার জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অনেকেই ওইদিন ছুটি নিয়েছেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। পবিত্র লাইলাতুল কদরের ছুটি আজ।
মাঝখানে সোমবার অফিস-আদালত খোলা থাকলেও মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটি। পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। অর্থাৎ সোমবার একদিনের ছুটি নিলে ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই বাস-ট্রেন-লঞ্চে ঘরমুখো মানুষের ভিড় ছিল ব্যাপক। অফিস শেষে অসংখ্য মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
অফিস-আদালতে রমজানের কর্মদিবস বিকেল সাড়ে ৩টায় শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। আজ সকাল থেকে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেনে ছাড়লেও ভিড় ছিল একটু বেশি।
