ঢাকা, শনিবার ০৪, মে ২০২৪ ৯:২৫:০২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

চাকরির জন্য আমরণ অনশনে প্রতিবন্ধী চাঁদের কণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৩৯ পিএম, ২৬ জুন ২০১৯ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে চাঁদের কণা (৩১)। শিশুকাল থেকে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার। কিন্তু হাতের উপর ভর দিয়ে হেঁটেই ২০১৩ সালে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। যোগ্যতা অনুযায়ী একটি সরকারি চাকরির জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন এ দুয়ার থেকে ও দুয়ার। নিরুপায় হয়ে আজ বুধবার (২৬ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন সেই চাঁদের কণা।

জানা যায়, মাত্র নয় মাস বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুটি পায়ের কার্যক্ষমতা হারায় চাঁদের কণা। তবুও বাবা-মার সচেতনতায় আর তার প্রতিবন্ধিতা জয়ের অদম্য প্রচেষ্টায় চলতে থাকে হাতে হেঁটে পড়ালেখা। তিনি যখন অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী তার স্কুল শিক্ষক মা হাসনা হেনা বেগম মারা যান। এর কয়েক বছর পর তার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এবং বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে তার জীবনে প্রতিবন্ধিতার সাথে নেমে আসে চরম দারিদ্রতা। অবশেষে পড়ালেখার খরচ যোগাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সামান্য বেতনে চাকরি নেন। শত কষ্টের মাঝেও গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে সফলতার সাথে অর্জন করেন উচ্চতর ডিগ্রি।   

চাঁদের কণা জানান, সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। অর্জন করেছেন প্রথম বিভাগ। শুধু তাই নয়, পড়ালেখার পাশাপাশি নিজেকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন। ভাড়উত্তোলন থেকে শুরু করে টিভি-রেডিও’তে সংবাদ পাঠ; টিভি প্রোগ্রাম গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা; নাটক, গল্প ও কবিতা লেখা; অভিনয় করা ও কবিতা আবৃতি করা; গল্প বলা; ছবি আঁকা এবং কম্পিউটারে সকল কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি।

তিনি জানান, রাজশাহী মাদার বক্স গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে তিনি অনার্স পড়েছেন। পঞ্চম তলায় তার ক্লাস হতো। অন্যসব ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজে আসতেন ৯টার দিকে। অথচ তিনি কলেজে যেতেন সকাল ৭টার দিকে। কারণ হাতে ভর দিয়ে পঞ্চম তলায় উঠতে তার দের ঘণ্টার মতো সময় লেগে যেতো। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন পর্যন্ত এমন লক্ষ্য-কোটি বাধা পেরিয়ে তিনি প্রতিবন্ধিতাকে জয় করেছেন; শুধুমাত্র তার স্বপ্ন একজন সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার জন্য। এরপর যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির জন্য বহু চেষ্টা করেছেন তিনি। এ বছরই তার সরকারি চাকরির বয়স শেষ। বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন।

তার হুইলচেয়ার ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন বার্তা লেখা ২০ টির মতো প্ল্যাকার্ড। গলায় ঝুলছে, ‘আমি আমার মা প্রধানমন্ত্রীর ভালবাসা চাই। তার সাথে দেখা করতে চাই।”

-জেডসি