চলে গেলেন গান্ধীবাদী কর্মী ঝর্ণা ধারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ২৭ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত
চলে গেলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত গান্ধীবাদী কর্মী ঝর্ণা ধারা চৌধুরী (৮১)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান তিনি। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
গত ২ জুন ভোরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর জয়াগ গ্রামের গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টে স্ট্রোক করেন ঝর্ণা। পরে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন এ সমাজকর্মী। স্কয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শঙ্করের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল।
দেশে-বিদেশে নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ঝর্ণা ধারা চৌধুরী। ২০১০ সালে ঝর্ণা ধারা চৌধুরী গান্ধী সেবা পুরস্কার পান। ২০১৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী’ খেতাবে ভূষিত হন। একই বছর তিনি বাংলাদেশে বেগম রোকেয়া পদক পান। ২০১৫ সালে একুশে পদক পান তিনি।
এ ছাড়া সমাজসেবক হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজাজ পুরস্কার-১৯৯৮, শান্তি পুরস্কার-২০০০, অনন্যা-২০০১, দুর্বার নেটওয়ার্ক-২০০৩, কীর্তিমতি নারী-২০১০, একুশে পদক-২০১৫, রোকেয়া পদক-২০১৩, সাদা মনের মানুষ-২০০৭ সহ বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
ঝর্ণা ধারা চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৫ অক্টোবর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সারাজীবন শান্তি প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রম দিয়ে গেছেন ঝর্ণা ধারা। যে জন্য বিয়ে করার ফুরসতও মেলেনি তারা।
সামাজিক কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন এই নারী হিতৈষী।
সহিংসতা দূর করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তার জীবন সংগ্রামের মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে ঝর্ণা ধারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক কাজ করেছেন।
নোয়াখালীতে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টে গ্রামীণ নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া, দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন ঝর্ণা ধারা চৌধুরী। গান্ধীজির মতবাদকে বাস্তবায়িত করতে গান্ধী আশ্রমের সমাজকর্মী হিসেবে ছুটে চলেছেন গ্রাম থেকে গ্রামে।
-জেডসি